বিচারপতি যশবন্ত বর্মা।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নগদ কাণ্ডে বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে সরাতে এবার তৎপরতা শুরু লোকসভায়। মঙ্গলবার ১৪৬ জন সাংসদের সই-সহ ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গ্রহণ করে স্পিকার ওম বিড়লা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করলেন। এই কমিটিতে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার, মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মনিন্দর মোহন ও প্রবীণ আইনজীবী বিভি আচার্য। বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তদন্তের পর এই কমিটি লোকসভায় রিপোর্ট জমা দেবে।
বিচারপতি যশবন্ত বর্মা অপসারণের প্রস্তাব গ্রহণ করার পর স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, “বিচারপতি যশবন্ত বর্মার অপসারন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিৎ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংসদ একজোট হয়েছে। মানুষ বিচার বিভাগের উপর আস্থা রাখে ফলে এই অপসারন প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য। ৩ সদস্যের কমিটি যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট পেশ করবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে না।” স্পিকার ওম বিড়লা আরও জানান, “আমি রবি শঙ্কর প্রসাদ এবং বিরোধী দলনেতা-সহ মোট ১৪৬ জন সদস্যের স্বাক্ষরিত প্রস্তাব পেয়েছি। যেখানে শাসকদলের পাশাপাশি বিরোধী সাংসদরাও রয়েছেন। যেখানে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে অপসারণের জন্য সংবিধানের ২১৭ এবং ২১৮ অনুচ্ছেদ এবং বিচারকদের বিরুদ্ধে তদন্ত আইন ১৯৬৮ এর ধারা ৩ এর অধীনে পদক্ষেপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১৪ মার্চ তৎকালীন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি ভার্মার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ও বিপুল পরিমাণ পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। অভিযোগ ওঠে পুড়ে যাওয়া ওই নোটের বান্ডিল ছিল হিসাব বহির্ভূত টাকা। মামলার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ঋণ সদস্যের আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এই কমিটি বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেলেও সেভাবে এখনো কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। শুধুমাত্র দিল্লি হাইকোর্ট থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাহাবাদ হাইকোর্টে। ঘটনার জেরে বারবার এই ইস্যুতে সরব হয়েছে সরকার পক্ষ। প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন এই ঘটনায় এখনও কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। সব মিলিয়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত মুখোমুখি দাঁড়ায় সরকার ও দেশের বিচারব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, এই ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পেশ হওয়ার অর্থ হল অভিযুক্ত ওই বিচারপতির অপসারণ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। সংবিধানের ১২৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সেই প্রস্তাবের পক্ষে সাংসদদের সই করে স্পিকারের কাছে জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে এই প্রস্তাব গৃহীত হতে হবে। তবে অভিযুক্ত যদি দোষী না হন সেক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না, এবং প্রস্তাব বাতিল হবে। আর যদি দোষী সাব্যস্ত হন সেক্ষেত্রে প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর বিচারপতিকে অপসারণের জন্য তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.