সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল। একাকীত্ব এতটাই গ্রাস করেছিল যে কারও সঙ্গে কথা পর্যন্ত ১৬ বছরের মেধাবী কিশোর। অবশেষে ‘মায়ের ডাকে’ নোট লিখে সুইসাইড করল মহারাষ্ট্রের সোলারপুরের ১৬ বছরের শিবশরণ ভুটালি টালকোটি! শুক্রবার সকালে মামাবাড়ি থেকে ওই কিশোরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
খবর পাওয়ার পর পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য পাঠায়। এদিকে যে ঘর থেকে ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই ঘর থেকেই একটি নোট উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু কী লেখা রয়েছে ওই নোটে? পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নোটে লেখা রয়েছে, “আমি শিবশরণ। আমি আত্মহত্যা করছি, কারণ বাঁচতে চাই না। যখন মা চলে গেলেন, তখনই আমায় চলে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু মামা আর ঠাকুমার মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে ছিলাম। কিন্তু গতকাল রাতে মা আমার স্বপ্নে এসেছিল। আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আমি এত কষ্টে আছি কেন, বলছিল তাঁর কাছে যেতে। সেই কথা শুনেই মায়ের কাছে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
সে আরও লিখেছে, “আমি মামা আর ঠাকুমার কাছে খুব কৃতজ্ঞ। ওঁরা আমাকে খুব ভালোবাসত, অনেক আদর করত। মামা, আমি চলে যাচ্ছি। আমার বোনকে সবসময় খুশি রেখো। ঠাকুমাকে বাবার কাছে পাঠিও না। তোমরা সবাই ভালো থেকো। আমার মৃত্যুর জন্য শুধু আমিই দায়ী।” চিঠির শেষে লেখা, ‘ইওরস পিন্টা’। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরের ডাক নাম ছিল পিন্টা। আর এর থেকেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মায়ের মৃত্যুশোক মেনে নিতে না পারায় আত্মহত্যা করেছে ওই কিশোর।
ওই কিশোরের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন মাস আগে শিবশরণের মা জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর থেকেই কারও সঙ্গে কথা বলত না শিবশরণ। সবসময় ঘরের মধ্যে নিজেকে বন্দি করে রাখত সে। এরপর কয়েকদিন আগে তাকে মামাবাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। কারও সঙ্গে কথা বলছিল না সে। এরইমধ্যে এমন ঘটনা ঘটাল ওই কিশোর। শিবশরণের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোর খুবই মেধাবী ছিল। বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত সে। নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে। সোলারপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.