Advertisement
Advertisement
Naxal

অস্ত্রত্যাগে রাজি? ৯ মাসে ২১০ সদস্য খুইয়ে সরকারের কাছে ‘শান্তি প্রস্তাব’ মাওবাদীদের

জেলবন্দি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এক মাসের যুদ্ধবিরতি চায় মাওবাদীরা।

Naxalites are giving up their weapons the organization is ready to surrender
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:September 17, 2025 9:29 am
  • Updated:September 17, 2025 12:46 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার মারে দেওয়ালের পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর অবশেষে মাথা নোয়াল মাওবাদীরা! গত ৯ মাসে ২১০ জন সদস্যের মৃত্যুর পর সরকারের কাছে শান্তির লক্ষ্যে আলোচনার প্রস্তাব দিল মাওবাদীরা। মাও-কেন্দ্রীয় কমিটির জানিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগ করতে রাজি। সিপিআই (মাওবাদী)’র তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, মাওবাদীরা বর্তমানে একমাসের অস্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চায়, যাতে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষ সমাধানের পথে আসতে পারে। মাওবাদী নেতা অভয়ের নামে এই চিঠি প্রকাশ্যে এলেও এর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন।  

Advertisement

মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সাল থেকে লাগাতার চলা অভিযানে দুই পক্ষই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, ভবিষ্যতে যত দূর সম্ভব জনসাধারণের স্বার্থে লড়াই করা সকল রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের সঙ্গে মিলে কাজ করব। আমরা এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা তাঁর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। সরকারের কাছে আমাদের আর্জি, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে থাকা আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এক মাসের সময় দিন।’ শুধু তাই নয়, জেলবন্দি মাও নেতাদের আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে, এই ইস্যুতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা যায় তার ব্যবস্থা করা হোক। মাওবাদী নেতা অভয়ের এই বিবৃতি গত ১৫ আগস্টের বলে জানা গিয়েছে।

মাওবাদীদের তরফে প্রকাশিত চিঠি।

আরও বলা হয়েছে, যদি সরকার সত্যিই আলোচনা চায় তাহলে আমাদের এক মাসের সময় দেওয়া হোক। এই সময়ে জেলবন্দি শীর্ষ মাওবাদী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় তারা। তবে এই এক মাস যাতে কোনও অভিযান না চলে সেটাও জানানো হয়েছে মাওবাদীদের তরফে। মাও সংগঠনের বার্তা, ‘এই সময়কালে তাদের উপর যেন পুলিশ কোনওরকম অভিযান না চালায়। সরকার যদি চায় তবে কাল থেকেই ভিডিও কলের মাধ্যমে আলোচনা চালাতে প্রস্তুত আমরা।’

এই চিঠি যদি সত্যিই মাওবাদীদের তরফে প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তাহলে একটা বিষয় স্পষ্ট যে নিরাপত্তাবাহিনীর লাগাতার অভিযানে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে মাওবাদীরা। তাদের একপক্ষ চাইছে অস্ত্র ছেড়ে আত্মসমর্পণের পথে হাঁটতে। এই চিঠির প্রেক্ষিতে ছত্তিশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, চিঠিটির আদৌ মাওবাদীদের কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিবৃতির সত্যতা যাচাইয়ের পর এই মাওবাদীদের দাবির প্রেক্ষিতে আলোচনা জন্য কেন্দ্রের কাছে এই বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। 

২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওবিরোধী অভিযান আরও গতি পেয়েছে। ২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জন মাওবাদীর। গ্রেপ্তার হয়েছে হাজারেরও বেশি, পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করেন ৮৩৭ জন। ২৪-এর পর ২০২৫ সালে অভিযানের ঝাঁজ আরও বেড়েছে। রিপোর্ট বলছে, গত ৯ মাসে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে ২১০ জন মাওবাদীর। এদের মধ্যে শুধুমাত্র ছত্তিশগড়ে ১৩ জন শীর্ষ মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে। যাদের মাথার ন্যূনতম ২০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অর্থ ক্রমশ মৃত্যুর পথে পা বাড়ানো। তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েই শান্তি চাইছে মাওবাদীরা। তবে সরকার মাওবাদীদের সে দাবি মানবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ