Advertisement
Advertisement
NCERT

‘আরএসএসের কোনও প্রভাব নেই’, পাঠ্যবইয়ে মুঘল সাম্রাজ্য নিয়ে বিতর্কে জল ঢালল NCERT

এনসিইআরটি-র পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়।

NCERT textbook chief defends Mughal-era changes and also denies RSS influence
Published by: Subhodeep Mullick
  • Posted:August 28, 2025 6:25 pm
  • Updated:August 28, 2025 7:10 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং)-র সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে বাদ দেওয়া হয় মুঘল এবং সুলতানি সাম্রাজ্যকে। পাশাপাশি, অষ্টম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বইয়ে মুঘল সম্রাট বাবরকে ‘ক্রূর ও নির্দয়’ শাসক বলেও বর্ণনা করা হয়। তারপরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, পাঠ্যবইয়ে বিজেপি এবং আরএসএসের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে এনসিইআরটি। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন খোদ এনসিইআরটির সমাজ বিজ্ঞানের প্রধান অধ্যাপক মিশেল ড্যানিনো। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এনসিইআরটি-র পাঠ্যবইয়ে কেন্দ্র বা আরএসএসের কোনও প্রভাব নেই।  

Advertisement

সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমরা যতটা সম্ভব সততার সঙ্গে ইতিহাস পরিবেশনের চেষ্টা করছি। ইতিহাসে যেটা ঘটেছিল তেমনটাই দেখানো হচ্ছে। আমরা মহিমান্বিত করছি না। এনসিইআরটি-র কোনও বই থেকে মুঘল সাম্রাজ্যকে বাদ দেওয়া হয়নি। শুধু পাঠ্যক্রম পুনর্গঠন করা হয়েছে।” মিশেল আরও বলেন, “মুঘলদের পাশাপাশি আমরা অন্যান্য শাসকদেরও জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অনেকেই বিশ্বাস করেন, ব্রিটিশরা ভারতে শাসন করার জন্য শুধু মুঘলদের পরাজিত করেছিল। কিন্তু বাস্তব সেটা নয়।” তাঁর সংযোজন, “অনেকেই বলছেন, পাঠ্যবইতে এনসিইআরটি হিন্দুত্ব কিংবা আরএসএসের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করছে। যেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এনসিইআরটি-র পাঠ্যবইয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপি বা আরএসএসের কোনও প্রভাব নেই।”

সম্প্রতি এনসিইআরটি-র সপ্তম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মুঘল ও সুলতানি সাম্রাজ্য। তার পরিবর্তে সংযোজন করা হয় মগধ, মৌর্য, শুঙ্গ এবং সাতবাহন সাম্রাজ্যের ইতিহাস। অন্তর্ভুক্ত করা হয় কুম্ভমেলার প্রসঙ্গও। এখানেই শেষ নয়। এনসিইআরটির অষ্টম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বইয়ে আবার মুঘল সম্রাট বাবরকে ‘ক্রূর ও নির্দয়’ শাসক বলেও বর্ণনা করা হয়। যা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক।

উল্লেখ্য়, এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়। এর আগে তারা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন এনে জানিয়েছিল, সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাগুলি হরপ্পা সভ্যতার পতনের কারণ হিসাবে বহিরাগত আর্যদের ভারতে আগমনের তত্ত্বকে নস্যাৎ করেছে। অর্থাৎ, আর্যদের দেখতে হবে ভারতের আদি বাসিন্দা হিসাবেই। একইভাবে, ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে, এনসিইআরটি বীরসা মুন্ডার উপর একটি অধ্যায় থেকে ‘হিন্দু’ শব্দটি বাদ দিয়েছিল। আগের বইটিতে সেই অধ্যায়ে বলা হয়েছিল, বীরসা মুন্ডা মিশনারি ও হিন্দু জমিদারদের বিরোধিতা করতেন। বাক্যটি থেকে ‘হিন্দু’ শব্দটিকে বাদ দেওয়া হয়।

বইগুলিতে এ ধরনের বদল থেকে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এমন করছে এনসিইআরটি? মানুষের সমষ্টিগত স্মৃতি থেকে কি এভাবে ইতিহাসকে মুছে ফেলা যাবে? এই পরিবর্তনগুলি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনারও শিকার হয় এনসিইআরটি। একাধিকবার বিরোধীদের রোষের মুখেও পড়ে শিক্ষা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থাটি। এই পরিস্থিতিতে এবার সমস্ত বিতর্কে জল ঢাললেন এনসিইআরটির সমাজ বিজ্ঞানের প্রধান।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ