সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারিদিকে পড়ে জুতো, ছেঁড়া জামা-কাপড়। হুড়োহুড়ি স্টেশনজুড়ে। বোনের নিথর দেহ কোলে তুলে রেললাইন ধরে হাঁটছেন এক যুবক। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে তাঁকে। চোখে জল। বুকে আশা যদি বাঁচানো যায় প্রিয় বোনকে।
কুম্ভে স্নানের জন্য সঞ্জয় ও তাঁর পরিবারে ১১জন নয়াদিল্লি স্টেশনে এসেছিলেন। ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝের ব্রিজ ধরে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামছিলেন তাঁরা। হঠাৎ পিছন থেকে ভিড়ের ধাক্কা। সামলাতে না পেরে এদিক-ওদিক ছিটকে যায় সঞ্জয়ের পরিবার। যুবক তাঁর মেয়ে ও শ্যালিকাকে কোনও মতে বাঁচান। কিন্তু ভিড়ের মাঝে পরে পদপিষ্ট হন তাঁর বোন। ঘটনার আধঘণ্টার পর বিস্তর খোঁজাখুজির পর বোনকে খুঁজে পান যুবক। তবে অজ্ঞান অবস্থায়। পরে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সঞ্জয়ের কথায়, “যতক্ষণে ওকে খুঁজে পাই ততক্ষণে হয়তো সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। বোনকে খুঁজে পাওয়ার পর আমরা সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই সময় কর্তৃপক্ষের থেকে কেউই সাহায্যের জন্য আসেননি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওঁর নিথর দেহ কোলে তুলে রেল লাইন ধরে হেঁটেছি।” শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনে কুম্ভ যাওয়ার পথে পদপিষ্টের ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মধ্যে রয়েছে চার শিশুও।
দিল্লির স্টেশনের এক হকার জানিয়েছেন, তাঁর ২৬ বছরের কর্মজীবনের এত ভিড় তিনি দেখেননি। তিনি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “আমার ২৬ বছরের কর্মজীবনে এত ভিড় দেখিনি। ছট পুজোতেও এত ভিড় হয় না। পুলিশ-সহ এনডিআরএফের দলও মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে মানুষ কারও কথা শুনছিল না।”
রেলের ডিসিপি জানিয়েছন, রেলের নথি অনুযায়ী প্রতিঘণ্টায় ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে। স্টেশনে ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে থাকে। ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দুর্ঘটনা ঘটেছে।” পদপিষ্টের ঘটনায় দুই সদস্যের উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করেছে রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.