সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সায়াহ্নে এসে নিজেকে ফের একবার ‘পল্টুরাম’ প্রমাণ করলেন নীতীশ। এবারের নির্বাচনে না জিতলে হয়ত রাজনৈতিক বনবাস প্রায় নিশ্চিত। অবস্থান বদলের খেলায় এগিয়ে থাকা নীতীশ এবার দল না হলেও নিজের বক্তব্যে পাল্টি খেলেন।সদ্য নীতীশ কুমারের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মাদ্রাসা বোর্ডের অনুষ্ঠানে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী টুপি পরতে অস্বীকার করছেন তিনি। অথচ প্রায় ১২ বছর আগে নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, ”দেশ চালাতে হলে টুপি আর তিলক দুটোই প্রয়োজন।”
বিহারের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী টুপি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি টুপি পরতে অস্বীকার করেন। পাশে থাকা দলের সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী মহম্মদ জামা খানের মাথায় পরিয়ে দেন। তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীরা টুপি পরাকে ‘সংখ্যালঘু তোষণ’ বলে অভিযোগ করেন। অথচ রাজ্যে প্রায় ১৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট আসন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই মুহূর্তে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দল এই ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দখলে আনার মরিয়া চেষ্টা করছে। বিহার নির্বাচনের কয়েক মাস আগে নীতীশের এই আচরণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
২০১৩ সালে নীতীশ কুমার বলেছিলেন, দেশ চালাতে টুপি আর তিলক দুটোই প্রয়োজন। সেই সময়ে নাম না করে তিনি নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করেন তিনি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদি এক মুসলিম ধর্মগুরুর দেওয়া টুপি পরতে অস্বীকার করেন। সেই সময় প্রতিবাদে তিনি বিজেপির সঙ্গে জোটও ভেঙে দেন। কিন্তু বারো বছরে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বারবার শিবির বদলে এখন মোদির সঙ্গী নীতীশ। বহু রাজনৈতিক উত্থানপতনের পর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মোদির নেতৃত্বেই বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে নীতীশের দাবি, তাঁর সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কাজ করেছে। তিনি বলেন, “২০০৫ সালের আগে কি কোনও কাজ হয়েছিল? মুসলিমদের জন্য কিছুই হয়নি। এখন মাদ্রাসা শিক্ষকদের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের সমান বেতন দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম মহিলাদের অধিকারেও আমরা কাজ করেছি।” তবে শিক্ষকদের একাংশ বেতন বকেয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মুখ্যমন্ত্রী পরে তাঁদের দাবিপত্র গ্রহণ করেন। এক প্রতিবাদী শিক্ষক সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি শুধু ২০০৫ আর ২০০৬-এর কথা বলেছেন। দুনিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান সমস্যার কথা বললেন না। এতে আমরা হতাশ।”
নীতীশকে সমর্থন করে জেডিইউ এমএলসি খালিদ আনোয়ার বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রী এই টুপি তাঁর মন্ত্রীর মাথায় পরিয়ে সংখ্যালঘু সমাজের মর্যাদা বাড়িয়েছেন।” তিনি দাবি করেন, নীতীশ ধর্মনিরপেক্ষ এবং সবসময় মুসলিমদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। আরজেডিকে আক্রমণ করে তাঁর অভিযোগ, তেজস্বীর দলই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে চাইছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.