সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিরকাল ভালো ও মন্দের বিতর্ক থেকে যাবে মিগ-২১ যুদ্ধবিমান নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে বালাকোট, একাধিক যুদ্ধে ভারতীয় সেনার ভরসার ‘অস্ত্র’ই ৬০ বছরে ৪০০টি দুর্ঘটনায় ২০০ জন পাইলটের মৃত্যুর কারণ! পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন জমানার বিমান নির্মাতা সংস্থা মিকোয়ান-গুরেভিচ (সংক্ষেপে মিগ) অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের সেই যুদ্ধবিমানই এবার অবসর নিতে চলেছে। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, আগামী সেপ্টেম্বরেই কর্মকাল শেষ হবে ‘বুড়ো’ মিগের। তার জায়গা নেবে নতুন এবং তরতাজা তেজস এমকে১এ যুদ্ধবিমান।
ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে ৯০০টি মিগ-২১ ছিল। যার মধ্যে ৬৬০টি ভারতে নির্মিত। দশকের পর দশক ধরে এই যুদ্ধবিমানগুলিই দেশরক্ষার কাজ করেছে। সময়ে সঙ্গে সঙ্গে বাদ পড়েছে বায়ুসেনার এই পুরনো সদস্য। বর্তমানে ৩৬টি মিগ-২১ রয়েছে সেনার কাছে। নির্মাতা সংস্থা মিকোয়ান-গুরেভিচ অ্যারোস্পেস কর্পোরেশন প্রথমবার ১৯৫৫ সালে তৈরি করে মিগ-২১ যুদ্ধবিমান। ১৯৬৩-র শেষে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসে যুদ্ধবিমানটির প্রথম পর্যায়ের সংস্করণ মিগ-২১ এফএল। অর্থাৎ প্রায় প্রায় ছয় দশক ধরে ভারতীয় বায়ুসেনার কর্মরত রয়েছে মিগ-২১। ভারতীয় বায়ুসেনার ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কর্মরত যুদ্ধবিমান।
বিভিন্ন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মোট ৮৭৪টি মিগ-২১ কিনেছে ভারত। মস্কোর প্রযুক্তিগত সহায়তায় রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান নির্মাণকারী সংস্থা ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্যাল লিমিটেড’ (হ্যাল) বানিয়েছে আরও ৬৫৭টি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্ব ভূমিকা নিলেও আশির দশকের গোড়া থেকেই মিগ-২১ ‘দুর্ঘটনাপ্রবণ’ বলে ভারতীয় বায়ুসেনা মহলে পরিচিতি পেতে থাকে। এমনকী একটা সময়ে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে চিহ্নিত হয় এই যুদ্ধবিমান। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬০ বছরে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রায় ৪০০টি মিগ-২১ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। যাতে মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রায় ২০০ জন পাইলটের। ৬০ জনের বেশি সাধারণ নাগরিকেরও প্রাণ গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আগামী সেপ্টেম্বর মাসে অবসর নিতে চলেছে বিতর্কিত সেই যুদ্ধবিমান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.