সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোর রীতিনীতিরও কপিরাইট! দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে আরাধনা শুরু হওয়ার পর এবার নতুন পদক্ষেপের পথে পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন পুরীর সাম্মানিক রাজা তথা জগন্নাথ মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব। তিনি জানিয়েছেন, পূজাচারের কপিরাইট নেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ মূলত ইসকনের দিকে। তাঁদের দাবি, ইসকন পুজোর রীতিনীতি না মেনে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সময় জগন্নাথ দেবের আরাধনা করছে, রথযাত্রা করছে। পুরীতে যে দিনক্ষণ মেনে রথযাত্রা, স্নানযাত্রা পালন করা হয়, বিদেশে ইসকন সে সব মানছে না। ইচ্ছামতো দিনে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি পালন করছে। এ তে জগন্নাথদেবের ভক্তদের ভাবাবেগে আঘাত লাগছে। গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেবের দাবি, “এ নিয়ে ইসকনের সদর দপ্তর মায়াপুরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” তবে ওড়িশা সরকার যে পুরীর মন্দিরের রীতিনীতি আচার-আচরণের কপিরাইট নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে সেটা তিনি নিশ্চিত করছেন। সরকারি সূত্রেও খবর, বিষয়টির আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কিন্তু এখানে প্রশ্ন হল, ইসকন যদি ভুল রীতি মেনে পুজো করেই থাকে, সেক্ষেত্রে ইসকনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়াই যেত। তাতে পুজোর রীতিনীতির ‘কপিরাইট’ নেওয়া কি জরুরি ছিল? তাছাড়া পুজোর রীতিনীতির কপিরাইট কি আদৌ নেওয়া যায়? এই কপিরাইট নেওয়ার অর্থ তো এটাই দাঁড়ায়, যে বিশ্বের আর কেউ ওই নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পুজোই করতে পারবেন না! এটা তো ধর্মাচরণে বাধা দেওয়ার শামিল।
এ রাজ্যের শাসকদলের একাংশের ধারণা, এটার নেপথ্যে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জনপ্রিয়তাও থাকতে পারে। অতীতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নাম জগন্নাথ ধাম রাখা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ওড়িশা সরকার তাতে আপত্তি জানিয়েছিল। পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানান। যদিও সেই আপত্তি ধোপে টেকেনি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দিঘায় জগন্নাথদেবের আরাধনা শুরুর পরই কি পুজোর রীতিনীতির ‘কপিরাইট’ নেওয়ার কথা ভাবল মন্দির কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.