সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বচ্ছ্বতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে মহারাষ্ট্রের সব বুথে পাঁচটার পর কী হয়েছিল, সেটার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করুক নির্বাচন কমিশন। সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। রাহুলের সেই চ্যালেঞ্জের জবাবে সুপ্রিম কোর্টকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করল কমিশন। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়েই বুথের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা যায় না।
কমিশন বলছে, বুথের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করলে কে কাকে ভোট দিচ্ছে সেটা না জানা গেলেও কে কে ভোট দিল সেটা জানা যাবে। অর্থাৎ কারা কারা ভোট দিচ্ছে না সেটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ভোট দেওয়া যেমন নাগরিকদের অধিকার, তেমনই ভোট না দেওয়াটাও তাঁর ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে পড়ে। ফলে কারা কারা ভোট দিচ্ছে না, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া যায় না। তাছাড়া কোনও ব্যক্তির অনুমতি না নিয়ে তাঁর কোনও ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা যায় না। রাহুলের দাবি মানতে হলে সেই নিয়মও ভঙ্গ করতে হয়।
রাহুলের সঙ্গে কমিশনের এই ‘লড়াই’টা দীর্ঘমেয়াদি। ভোট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব লোকসভার বিরোধী দলনেতা। চলতি মাসের শুরুতেই মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’য়ের অভিযোগ এনে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রবন্ধ লেখেন রাহুল। ২০২৪ সালের ভোটে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ভুয়ো ভোটার তালিকা, জাল ভোট এমনকী ভোটের বুথেও দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। রাহুল দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগের জন্য প্যানেল গঠন, তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢোকানো, ভোটারদের সংখ্যা বৃদ্ধি, ঠিক যেখানে বিজেপির জয় প্রয়োজন, সেখানে জাল ভোট এবং সর্বশেষ এই কর্মকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করা, সবটাই হয়েছে শাসকদলকে সাহায্য করতে।
রাহুলের সেই অভিযোগের পর পালটা দেয় নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগকে রীতিমতো কড়া ভাষায় খণ্ডন করে নির্বাচন কমিশন। মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে রাহুল গান্ধীর দাবি অস্পষ্ট এবং সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে দাবি করে তারা। কমিশনের যুক্তি, সমস্ত রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্ট ভোটের সময় উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেসের অনুমোদিত এজেন্টরা কখনও অস্বাভাবিক ভোটগ্রহণ সম্পর্কে কোনও আপত্তি বা অভিযোগ করেনি। তাহলে এখন কেন অভিযোগ করা হচ্ছে? কিন্তু নির্বাচন কমিশন বিবৃতি প্রকাশের পরও রাহুল গান্ধী থামেননি। এবার সুর আরও চড়িয়ে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। বিরোধী দলনেতার চ্যালেঞ্জ ছিল, নির্বাচন কমিশনের যদি কিছু লুকোনোর না থাকে তাহলে স্বচ্ছ্বতার স্বার্থে ডিজিটাল ভোটার লিস্ট, মহারাষ্ট্রের সব বুথে পাঁচটার পর কী হয়েছিল, সেটার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হোক। সেটারই এবার জবাব দিল কমিশন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.