সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটি স্যাটেলাইট ফোন। যার দৌলতেই ৩ মাস গা ঢাকা দিয়ে থাকা পহেলগাঁও জঙ্গিদের জন্য জাহান্নামের দরজা খুলে দিল ভারতীয় সেনা। সোমবার দুপুরে বৈসরন উপত্যকায় হামলার মাস্টারমাইন্ড সুলেমান মুসা ও তার দুই সঙ্গীকে খতম করেছে সেনাবাহিনী। এবার সামনে এল অপারেশন মহাদেবের খুঁটিনাটি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতের ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় নাগরিকের। নৃশংস এই হামলার পর গত তিন মাস ধরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল জঙ্গিরা। তবে সম্প্রতি জঙ্গিদের কাছে থাকা টি৮২ আল্ট্রাসেট কমিউনিকেশন ডিভাইস চালু করে জঙ্গি মুসা। এটি এক ধরনে স্যাটেলাইট ফোন যা পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানোর সময় ব্যবহার করে জঙ্গিরা। সেই ফোন ফের চালু হতেই সেনাবাহিনী জঙ্গিদের লোকেশন জেনে যায়। শুরু হয়ে যায় অপারেশন মহাদেবের প্রস্তুতি। গত কয়েকদিন ধরে জঙ্গিদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল সেনাবাহিনী। অপেক্ষা করা হচ্ছিল এমন জায়গায় জঙ্গিরা যাক, যেখানে জঙ্গিদের ঘিরে ফেলে নিকেশ করা হবে। পালানোর কোনও পথ থাকবে না।
সেই মতো সোমবার আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সকাল ৮টায় শ্রীনগরের দাচিগাম জঙ্গল এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে তল্লাশি চালিয়ে জঙ্গিদের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয় সেনা। এরপর ভারতীয় সেনা, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফের যৌথ বাহিনী অপারেশন মহাদেবের অভিযান শুরু করে। প্রায় ৩০ মিনিট পাহাড়ি চড়াই পেরোনোর পর জঙ্গিদের লোকেশন সম্পর্কে আরও একবার নিশ্চিত হয় সেনা। ১১টা নাগাদ শুরু হয় গুলির লড়াই। মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় প্রথম জঙ্গির। এরপর ২ কিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে আরও দুই জঙ্গিকে নিকেশ করে সেনা।
সেনার তরফে জানা গিয়েছে, ওই জঙ্গলের মধ্যেই অস্ত্র ভাণ্ডার গড়ে তুলেছিল জঙ্গিরা। বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদের পাশাপাশি তাদের কাছে ছিল কারবাইন ও একে ৪৭-এর মতো অত্যাধুনিক সব রাইফেল। নিরাপত্তাবাহিনীর দাবি, এই জঙ্গি আরও বড় কোনও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জন পর্যটকের। ঘটনার তদন্তে নেমে কাশ্মীরের স্থানীয় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। পাশাপাশি জানানো হয়েছিল, এই হামলায় যুক্ত ছিল ৩ লস্কর জঙ্গি যারা পাক নাগরিক। তাদেরই প্রধান ছিল এই সুলেমান শাহ ওরফে মুসা। প্রথমে পাকিস্তান সেনার এলিট ইউনিট কমান্ডো ছিল মুসা। পরে হাফিজ সইদের লস্কর-ই-তইবায় সামিল হয়। অভিযানে মৃত অন্য দুই জঙ্গির পরিচয় হল, জিব্রান (গত বছর সোনমার্গের টানেলে জঙ্গি হামলায় যুক্ত) এবং আফগানি জঙ্গি হামজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.