Advertisement
Advertisement
Probashe Durga Puja

দিল্লির কেদারনাথ মন্দিরে পূজিত হবেন মা! করোলবাগের মণ্ডপ সেজে উঠেছে এই আদলেই

দিল্লির তৃতীয় প্রাচীনতম দুর্গাপুজো পা রাখতে চলেছে ৮৪তম বছরে।

Probashe Durga Puja: Pandle of Karol Bagh Puja Samiti decorated in the style of the famous Kedarnath Temple in Delhi
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:September 19, 2025 8:55 pm
  • Updated:September 20, 2025 9:10 am   

সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কেদারনাথ মন্দিরে পূজিত হবেন মা দুর্গা। না না, আঁতকে ওঠার কিছু নেই। আসলে এবার দিল্লির তৃতীয় প্রাচীনতম দুর্গাপুজো করোলবাগ পূজা সমিতির মণ্ডপ সেজে উঠছে বিখ্যাত কেদারনাথ মন্দিরের আদলে। সেখানেই পুজোর কয়েকদিন সপরিবারে বিরাজ করবেন দুগ্গা মা।

Advertisement

দিল্লির দুর্গাপুজোর কথা উঠলে যে কয়েকটি পুজোর নাম আসে, তার প্রথমদিকেই থাকে করোলবাগের পুজো। এবার যে পুজো পা রাখতে চলেছে ৮৪তম বছরে। কাশ্মীরি গেট, মিন্টো রোডের পর দিল্লির প্রাচীনতম পুজো মধ্য দিল্লির এই পুজো। করোলবাগ এলাকা শহরের অন্যতম বিজনেস হাব। এখানে হাঁটতে হাঁটতে মনে হতেই পারে আপনি চলে এসেছেন কলকাতার বিখ্যাত সোনাপাড়া বউবাজারে। রাস্তার দু’দিকে সার দিয়ে গয়নার দোকান। যার প্রায় সবেতেই রয়েছে বং কানেকশন। দোকানগুলির বেশিরভাগের মালিকই বাঙালি। যে কয়েকটি অবাঙালি দোকান, তার কর্মচারী, শিল্পীরা আবার বাঙালি। চিত্তরঞ্জন পার্কের মতো এখানেও হাঁটার পথে কানকে তৃপ্তি দেবে পথচলতিদের মুখনিঃসৃত বাংলা ভাষা।

গত কয়েকবছরে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবার্ষিকী, লালকেল্লা, চন্দ্রযানের মতো থিমের পুজো করে আসা করোলবাগ গত বছর কোনও থিমে না গিয়ে একেবারে সাদামাটা পুজো করেছিল। বাংলার বিভিন্ন জেলায় বন্যা হওয়ায় পুজোর বাজেট কাটছাঁট করে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পাঠিয়েছিলেন রবিন বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপক ভৌমিকরা। এবার আবার তাঁরা ফিরছেন স্বমহিমায়। উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করতে শিল্পী আসছেন ডায়মন্ড হারবার, মেদিনীপুর থেকে। পুরোহিত, ঢাকিদেরও পোস্টাল অ্যাড্রেস বাংলার।

গত কয়েকবছরের মতো এবারও করোলবাগের মূর্তি তৈরি করছেন দিল্লির সব চেয়ে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ শিল্পী সলিল ভট্টাচার্য। সপ্তমী সন্ধ্যায় বিখ্যাত শিল্পী সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবৃত্তিতে মাতবেন স্থানীয়রা। বাকি দিনগুলিতেও সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান করবেন বিভিন্ন বাংলা রিয়ালিটি শোতে অংশ নেওয়া শিল্পীরা। আগামী সপ্তাহান্ত থেকেই শুরু হয়ে যাবে স্থানীয় বাচ্চাদের গান, নাচ, আঁকা প্রতিযোগিতা। পঞ্চমীর দিন উদ্বোধন হবে মণ্ডপের। সেদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় অবাঙালিদের জন্য হবে সাঁই জাগরণ। পরদিন সকালে রক্তদান ও বস্ত্র বিতরণের পর সন্ধ্যায় আবরণ উন্মোচন হবে মৃন্ময়ী মূর্তির। হবে স্থানীয়দের তৈরি খাবারের আনন্দমেলা। সপ্তমী থেকে নবমী- তিনদিনই পাত পেড়ে ভোগ খাবেন হাজার হাজার দর্শনার্থী।

পুজোর সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিক বলছিলেন, “আমাদের পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হল এখানে ধর্ম-বর্ণ, জাত-পাত, সামাজিক প্রতিষ্ঠা এসবের কোনও ভেদাভেদ থাকে না। পুজোয় এলে দেখতে পাবেন, রিকশাওয়ালার সঙ্গে পাত পেড়ে খেতে বসেছেন পাড়ার কোনও স্বর্ণ ব্যবসায়ী। পুজোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোর কাজ করছেন কোনও দোকানের কর্মী। আমরা সবাই একসঙ্গে মায়ের আরাধনায় এভাবেই মেতে থাকি।” সভাপতি রবিন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার শোনালেন, “দিল্লির অন্যতম প্রাচীন পুজো হওয়ায়, আমাদের দায় ও দায়িত্ব অনেকটাই বেশি। তাই প্রতিবারই এই ক’দিন তো বটেই, সারা বছরই কিছু না কিছু সামাজিক কাজে আমরা নিজেদের যুক্ত রাখি।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ