Advertisement
Advertisement
INDIA bloc

দিল্লিতে বিরোধীদের ‘ভোটচুরি’র প্রতিবাদ মিছিল আটকালো পুলিশ, ব্যারিকেডে চড়লেন মহুয়া, রাস্তায় বসে রাহুল

রাহুল-সহ একাধিক সাংসদকে আটক করল দিল্লি পুলিশ, অসুস্থ মহুয়া।

Protesting INDIA bloc MPs stopped by Delhi Police near Parliament
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:August 11, 2025 12:11 pm
  • Updated:August 11, 2025 12:57 pm   

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নামে ‘ভোটচুরি’র প্রতিবাদে উত্তাল দিল্লি। সোমবার সংসদ ভবন থেকে অন্তত ২০০ বিরোধী সাংসদ প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে রওনা দিলে সেই মিছিল আটকাল পুলিশ। সংসদ ভবন থেকে কিছু দূরে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকালে। ব্যারিকেডে চড়ে স্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূল সংসদ মহুয়া মৈত্র, সুস্মিতা দেবরা। ব্যারিকেড টপকে চলে আসেন অখিলেশ যাদব। অন্যদিকে, বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে।

Advertisement

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সংসদ ভবন থেকে প্রতিবাদী পদযাত্রা শুরু করেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। লক্ষ্য ছিল নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও। পরিস্থিতি খারাপ আকার নিতে পারে অনুমান করে কমিশনের তরফে বিরোধী শিবিরকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, এই ইস্যুতে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে ৩০ জন প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলা হয়। সময় দেওয়া হয় দুপুর ১২টা। বিরোধী সাংসদদের এই মিছিলের অনুমতিও দেওয়া হয়নি দিল্লি পুলিশের তরফে। এই অবস্থায় সংসদ ভবন থেকে মিছিল বের হওয়ার পর কিছুটা দুরেই ব্যারিকেড তৈরি করে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। পালটা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন সাংসদরা।

পুলিশি বাধা পেয়ে রাস্তাতেই বসে পড়তে দেখা যায় কংগ্রেস সাংসদদের। ছিলেন, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। অন্যদিকে শাড়ি পরেই ব্যারিকেডের উপর চড়েন মহুয়া, সুস্মিতা-সহ তৃণমূলের অন্যান্য সাংসদরা। ব্যারিকেড টপকে চলে আসেন সপা সাংসদ অখিলেশ যাদব, ভূপেন্দ্র যাদবরা। তাঁদের কোনওমতে ঠেকিয়ে ব্যারিকেডের ওপারে পাঠানোর চেষ্টা হয়। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, নরেন্দ্র মোদি চোর হ্যায়’। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলার পর দিল্লি পুলিশের তরফে আটক করা হয় রাহুল গান্ধী-সহ বেশ কয়েকজনকে। পাশাপাশি অসুস্থ হয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। পুলিশ ভ্যান থেকে সংবাদমাধ্যমকে রাহুল বলেন, “ওরা কথা বলতেই চায় না, কারণ ওরা মুখ লুকোতে চাইছে। সত্যিটা গোটা দেশের সামনে চলে এসেছে। এই লড়াই রাজনৈতিক নয়, সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। ফলে আমরা চাই সঠিক ভোটার লিস্ট।”

অন্যদিকে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, “সবচেয়ে অসাংবিধানিক কাজ যিনি করছেন তিনি রাহুল গান্ধী। SIR এই প্রথমবার হচ্ছে না। কংগ্রেস প্রথমে ইভিএম নিয়ে মিথ্যে বলেছিল। এবারও একই নাটক চলছে। আমরা তো বলেছি ওদের কাছে যদি কোনও প্রমাণ থাকে তবে তা সামনে আনুক।”

প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) পর বিহারে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিরোধী শিবির অভিযোগ করেছে, কমিশনকে বিজেপি ব্যবহার করছে। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোট এবং কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটে নির্বাচন কমিশন ‘কারচুপি’ করেছে বলে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী। কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার মতো কয়েকটি রাজ্যের উদাহরণ টেনেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। এদিকে আগামী বছরে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অসম, তামিলনাড়ুতে বিধানসভা ভোট রয়েছে। ফলে শঙ্কিত বিরোধী শিবির। গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় দলীয় সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এসআইআর নিয়ে প্রয়োজনে কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করা হবে। এবার রাজধানীর বুকে সেই কর্মসূচি ঘিরে রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠল নয়াদিল্লি।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ