রাহুলের বাড়িতে নৈশভোজে অভিষেক। ফাইল ছবি।
নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: “ব্যক্তিগতভাবে রাহুল গান্ধী ফোন করে তাঁর গৃহপ্রবেশ ও বৈঠকে আমন্ত্রণ করেছেন বলেই এসেছি।” লোকসভার বিরোধী দলনেতার নৈশভোজ-বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এমনই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক-সহ ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শীর্ষস্তরীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের ভোটচুরি নিয়ে শরিকদের সতর্ক করেন রাহুল। কমিশন এবং বিজেপি যৌথভাবে গণতন্ত্রের উপর কীভাবে আঘাত হানছে, সেটার প্রমাণও তুলে ধরেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
‘বাংলা ভাষার অপমান’ ও রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের গেরুয়া শিবিরের হয়ে কাজ করার ইস্যুতে তৃণমূল যে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নেমেছে তা এদিন দিল্লি ও কলকাতায় স্পষ্ট করেছেন তিনি। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার নজির তুলে ধরে ‘মোদির বন্ধু ট্রাম্প’-এর ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির জেরে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন অভিষেক। কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে রাহুলের বাড়ি যাওয়ার আগে রাজধানীতে তৃণমূলের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ স্পষ্ট জানান, “আমাদের কাছে বাংলাই প্রায়োরিটি। সেখানে আমাদের পাশে কেউ থাকলে আমরাও তাদের সঙ্গে দু’পা চলতে পারি। কংগ্রেস তো আজ বাংলার ইস্যুতে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এটা তো ভালো বিষয়।”
বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’-র বৈঠকে অংশগ্রহণ নিয়েও এদিন সাংবাদিকদের কাছে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করেন অভিষেক। বলেন, “আমরা তো ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে কোনওদিন ‘না-যাওয়া’ করিনি। মমতাদি নিজে গিয়েছেন।” ২০২৫ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সঙ্গে তৃণমূলের আসনরফা না হওয়া নিয়েও এদিন দলের তরফে ব্যাখ্যা দিয়েছেন লোকসভার নেতা। বলেছেন, “ইন্ডিয়া’র বৈঠকে আমরা আসন ভাগাভাগির কথা বলেছিলাম। ওরাই দেরি করে কিছু না জানানোয় আমরা একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” তৃণমূল যে ইন্ডিয়া জোটের ঐক্যের পক্ষেই সেটা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, “ওরা দু’পা হাঁটলে, তৃণমূল চার পা হাঁটবে।” ওই বৈঠকে যেভাবে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী অভিষেক এবং ডেরেক ও ব্রায়েনকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন সেটাও তাৎপর্যপূর্ণ।
অভিষেক ছাড়াও ইন্ডিয়া জোটের ওই বৈঠকে অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরে, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, মেহবুবা মুফতি, ফারুখ আবদুল্লা, এম এ বেবি, কমল হাসান-সহ জোটের অন্যান্য নেতারা। ওই বৈঠকে কংগ্রেস নেতৃত্ব বিহারের SIR, মোদির বিদেশনীতির ব্যর্থতা, এবং নির্বাচন কমিশনের ভোট চুরি নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে কোণঠাসা করার ক্ষেত্রে শরিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, আগামী ২৪ আগস্ট বিহারে রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদবের যৌথ জনসভায় ইন্ডিয়া জোটের সব শরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.