Advertisement
Advertisement
Election Commission

২২ বছর পর ভোটার তালিকা সংশোধন, বিরোধী চাপেই তৎপর নির্বাচন কমিশন

অবৈধ ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে নড়েচড়ে বসল কমিশন।

Revision of voter list by Election Commission after 22 years
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:June 26, 2025 8:56 am
  • Updated:June 26, 2025 8:58 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবৈধ ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে ২২ বছর পর নড়েচড়ে বসল নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ভিনদেশি নাগরিকদের তালিকা থেকে বাদ দিতেই কমিশনের এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে। নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। জন্মের প্রমাণপত্র সঠিকভাবে দাখিল করতে না পারলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি ভোটার তালিকা নিয়ে সরব হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় একই ভোটার কার্ড নম্বরে একাধিক এপিক রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপরেই মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার ভোটে তালিকায় ব্যাপক গরমিল ছিল বলে ধারাবাহিকভাবে অভিযোগ করে আসছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বিরোধীদের চাপেই কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ভোটার তালিকা সংশোধন করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’। অবৈধ অভিবাসী-সহ অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। তারা বলেছে, যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হন সেটা নিশ্চিত করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে শেষবার ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছিল। চলতি বছরের শেষে নির্বাচন হবে বিহারে। তাই বিহার থেকেই জাতীয় পর্যায়ের এই উদ্যোগ শুরু করতে চলেছে কমিশন। এক এক করে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে। ভোটার তালিকায় নির্ভুলতা, বিশেষ করে অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। শাসক বিজেপিও অবৈধ অভিবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষিতেই নির্বাচন কমিশন তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিল।

মঙ্গলবার এই বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই আদেশ অনুসারে, ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল না, তাঁদের জন্মস্থানের প্রমাণ দিতে হবে। এর জন্য ২০০৩-এর পরে তালিকাভুক্ত ভোটার বা নতুন আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের সময় বুথ স্তরের অফিসাররা একটি ফর্ম দেবেন। সেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকত্বের সেলফ অ্যাটেস্টেট ঘোষণাপত্রও জমা দিতে হবে। ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে জন্মগ্রহণকারী ভোটারদের, প্রামাণ্য নথি-সহ তাঁদের জন্মতারিখ এবং জন্মস্থানের উল্লেখ করতে হবে। জন্মস্থান এবং জন্ম তারিখের প্রমাণ হিসেবে জন্মের শংসাপত্র বা পাসপোর্টের মতো ১১টি যোগ্য নথির যে কোনও একটিকে ব্যবহার করা যাবে। ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে জন্মগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত প্রমাণপত্রের পাশাপাশি বাবা-মায়ের নথিপত্রও দিতে হবে। আর ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বরের পরে জন্মগ্রহণকারীদের নিজেদের জন্মস্থান এবং জন্মতারিখের প্রমাণপত্রের সঙ্গে বাবা-মা দু’জনের নথিপত্রই জমা দিতে হবে। ২০২৫-এর ২৫ জুন অর্থাৎ, বুধবার থেকেই বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হচ্ছে।

২০০৩ সালের ভোটার তালিকাকে মূল খসড়া হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ভোটারদের বিবরণ যাচাই করতে এবং ফর্ম ও প্রামাণ্য নথিপত্র সংগ্রহের জন্য ঘরে ঘরে গিয়ে সমীক্ষা করবেন ব্লক স্তরের অফিসাররা। এর পরে জমা দেওয়া ফর্ম ও নথিগুলি যাচাই করবেন ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা। কোনও সন্দেহ হলে গ্রাউন্ড লেভেলে গিয়ে অনুসন্ধান করবেন তাঁরা। তার পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে সরকারি আদেশ জারি করবেন। বুথ স্তরের এজেন্টদের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার জড়িত হবে রাজনৈতিক দলগুলিও। প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তারা প্রয়োজন মতো কমিশনের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাতে বা এর বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবে। যাচাই-বাছাইয়ের পরে ২০২৫ সালের ১ জুলাই প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত তালিকা।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement