সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধী শিবিরের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী সুদর্শন রেড্ডি ‘নকশাল-সমর্থক’, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দাবিতে বিতর্ক তুঙ্গে। এই ইস্যুতেই এবার ব্যক্তি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেকার লক্ষ্মণরেখা শাহকে বুঝিয়ে দিয়ে পালটা তোপ দাগলেন প্রাক্তন সুপ্রিম বিচারপতি রেড্ডি।
শুক্রবার কেরলের কোচিতে একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে শাহ বলেন, “বিরোধী দলের প্রার্থী সুদর্শন রেড্ডিই বামপন্থী চরমপন্থা এবং নকশালবাদকে সমর্থন করে রায় দিয়েছেন। যদি সালওয়া জুডুমের বিরুদ্ধে কোনও রায় না দেওয়া হত, তাহলে ২০২০ সালের মধ্যে বামপন্থী চরমপন্থা শেষ হয়ে যেত। আদর্শে অনুপ্রাণিত এই ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের মতো পবিত্র প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সালওয়া জুডুমের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন। কংগ্রেস পার্টি বামপন্থীদের চাপে পড়েই এমন এক ব্যক্তিকে উপ-রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করেছে, যে নকশালদের সমর্থক।”
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীরা এনডিএ প্রার্থী তামিলনাডুর বাসিন্দা সি পি রাধাকৃষ্ণাণের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা রেড্ডিকে প্রার্থী করার পর থেকেই একে দক্ষিণ বনাম দক্ষিণের লড়াই বলে রাজনৈতিকমহলের যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তাও খারিজ করার চেষ্টা করেন শাহ। তিনি বলেন, “উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে দক্ষিণ বনাম দক্ষিণ বলা সঠিক নয়। বিষয়টিকে এইভাবে দেখাই উচিত নয়। কারণ, উপরাষ্ট্রপতি সারা দেশেরই। দেশের যে কোনও রাজ্য বা প্রান্ত থেকেই উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন।”
রেড্ডির বিরুদ্ধে বিজেপি যে নকশাল সমর্থক অভিযোগ তুলে প্রচার চালাবে তা প্রত্যাশিতই ছিল। সেই মতোই এদিন শাহর মুখে রেড্ডির ২০১১ সাল দেওয়া রায়ের প্রসঙ্গ উঠেছে। তবে এই ইস্যুতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পালটা জবাব দিতে ছাড়েননি প্রাক্তন বিচারপতি তথা উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী সুদর্শন রেড্ডি। শনিবার পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সালওয়া জুডুম মামলার রায় সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছিল, “ওই রায় আমার নয়। আমি এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কাদা ছোড়াছুড়িতে নামতে রাজি নই।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “বিতর্কের মধ্যে শালীনতা থাকা আবশ্যক।” এবং জোর দিয়ে বলেন, আসন্ন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন “দুই ব্যক্তির মধ্যে লড়াই নয়, বরং দুটি ভিন্ন মতাদর্শের লড়াই।”
উল্লেখ্য, ছত্তিশগড় সরকার নকশালদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সালওয়া জুডুম অভিযান শুরু করেছিল, যেখানে আদিবাসী যুবকদের অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল এবং বিশেষ পুলিশ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০১১ সালে, সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির বেঞ্চ এটি নিষিদ্ধ করে এবং বলে যে এই পদ্ধতিটি ‘অসাংবিধানিক এবং অবৈধ’। আদালত বলেছিল যে সরকারের কাজ হল নিরাপত্তা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে নকশালবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, দরিদ্র আদিবাসীদের ঢাল বানিয়ে বিপদে ফেলা নয়। সিদ্ধান্তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, এই যুবকদের অবিলম্বে নিরস্ত্র করা উচিত এবং সরকারকে নকশালবাদের মূল কারণগুলি খুঁজে বের করার জন্য কাজ করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.