সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: লুকআউট নোটিসের পরেও কীভাবে সাড়ে চার বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন রাশিয়ান ভিক্টোরিয়া? কী করছিল পুলিশ? আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন কাজে গাফিলতি? দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের। পুলিশের কর্তব্যে গাফিলতি, ব্যর্থতা নিয়ে শুক্রবার ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। অবিলম্বে মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুকে দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে ফের আদালতের হেফাজতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। শিশুকে নিয়ে পালানোর অপরাধ-সহ একাধিক ধারায় ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। আগামী ১০ দিন পর ফের মামলার শুনানি।
প্রসঙ্গত, চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন চিনে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় রাশিয়ার ভিক্টোরিয়া জিগালিনার। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ে করে চন্দননগরের বাড়িতে ফেরেন যুগল। তখনই সৈকত ও বসু পরিবার জানতে পারে ভিক্টোরিয়ার বাবা ছিলেন রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ‘এফএসবি’-র প্রাক্তন আধিকারিক। সৈকতের দাবি, বিয়ের পর থেকে ফোর্ট উইলিয়ামে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন থাকেন স্ত্রী। কিন্তু সৈকতের বাবা প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার সমীর বসু সেই অনুরোধে বেঁকে বসেন। সৈকতের দাবি, তাতেই ভিক্টোরিয়া সন্তানকে শুধুমাত্র নিজের কাছে রাখার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান। সেই মামলা চলাকালীন হঠাৎই সন্তানকে নিয়ে উধাও হয়ে যান ভিক্টোরিয়া।
এরপরই সন্তানকে ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সৈকত। সেই মামলায় অভিযুক্ত ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অবিলম্বে ভিক্টোরিয়াকে শিশু-সহ খুঁজে বের করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে। বাচ্চাটিকে খুঁজে পেলে তুলে দিতে হবে বাবার হাতে। এখানেই শেষ নয়, ভিক্টোরিয়া বসুর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা নির্দেশ দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে। তিনি যাতে কোনওভাবেই দেশ না ছাড়তে পারেন তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে গত ৪ জুলাই শেষবার ওই রুশ নাগরিককে এক আধিকারিকের সঙ্গে দিল্লির রাশিয়ান দূতাবাসে দেখা গিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.