সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ বলছেন না যে কুকুরদের মেরে ফেলা হবে, তাদের আলাদা রাখতে হবে। পথকুকুর নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে জানাল কেন্দ্র। যদিও শঙ্কিত পশুপ্রেমীদের প্রশ্ন, লোকালয় থেকে ধরার পরে কোথায় রাখা হবে তাদের? আশ্রয়কেন্দ্র তো তৈরি নেই! সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশের উপর আংশিক স্থগিতাদেশেরও আর্জি জানান তাঁরা। যদিও এদিন শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রাখল। এইসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, যাঁরা আদালতের নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা দায়িত্ব নিন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এন অঞ্জরিয়ার বেঞ্চে পথকুকুর সংক্রান্ত মামলা ওঠে। শুনানিতে দেশজুড়ে কুকুরের কামড়ের ঘটনার ভয়াবহ পরিসংখ্যান দেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, বছরে ৩৭ লক্ষ কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রতি দিনের হিসাবে তা প্রায় ১০ হাজার। এরপরেই তিনি বলেন, পথকুকুরদের মেরে ফেলার কথা কেউ বলছে না। আমরা কেউই পশুবিদ্বেষী নই। তবে তাদের আলাদা করে রাখা জরুরি।
অন্যদিকে পশুপ্রেমী সংগঠনের হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বল সওয়াল করেন, দিল্লিতে পথকুকুরদের জন্য কোনও আশ্রয়কেন্দ্র নেই। তাহলে তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে কোথায় রাখা হবে? এভাবে অবলা প্রাণীদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সিব্বল। অভিযোগ করেন, গত সোমবার সুপ্রিম নির্দেশের পরে ইতিমধ্যে ৭০০ পথকুকুরকে ধরা হয়েছে। বিষয়টি যাতে বন্ধ হয় তার জন্য সুপ্রিম কোর্টেরই দুই বিচারপতির নির্দেশিকার উপর আংশিক স্থগিতাদেশের আর্জি জানান তিনি। যদিও এদিন দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
দিল্লিতে পথকুকুরদের কামড়ে জলাতঙ্ক এবং তার জেরে আমজনতার মৃত্যু- দুটোই উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, এই সংক্রান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই সোমবার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, দিল্লি-এনসিআর এলাকার সমস্ত পথকুকুরকে অবিলম্বে ধরতে হবে। তাদের নির্বীজকরণ করিয়ে পাঠাতে হবে নিরাপদ আশ্রয়ে। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতটা প্রয়োজন বলপ্রয়োগ করে পথকুকুরদের ধরতে হবে। কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হবে। শীর্ষ আদালতের মতে, সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের প্রতিবাদে সেলিব্রিটি থেকে আমজনতার বিরাট অংশ সরব হয়েছেন। তারপরেই বিষয়টি প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তিনি বলেন, “সারমেয়দের নিয়মিত নির্বীজকরণ এবং টিকাদানের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” কিন্তু কোন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি একথা বলেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, ২০২৪ সালে দিল্লির পথকুকুরদের নির্বীজকরণ এবং টিকাদান নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি আবেদন জমা পড়েছিল। বলা হয়েছিল, রাজ্যের প্রশাসন বিষয়টির দিকে মনযোগ দিচ্ছে না। বুধবার সেই মামলাটিরও শুনানি ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.