ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারের ‘ভোট অধিকার যাত্রা’ থেকে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব জনতার কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ‘আমাদের মহাজোটকে সরকারে আনুন, আমরা রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করব।’ এরপরেই তাঁর এই মন্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, এবারই প্রথম কংগ্রেস বাদে ইন্ডিয়া জোটের কোনও দলনেতা সরাসরি রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে সমর্থন করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই তেজস্বীর এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে। এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র কংগ্রেসই রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে তুলে ধরেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তেজস্বীর এই বার্তায় শুধু বিহারেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’র বাকি শরিকদলগুলি কিন্তু সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, কাকে বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী করা হবে তা ঠিক করার সময় এখনও আসেনি। কেউ কেউ বলছেন, তেজস্বী বিহার বিধানসভা ভোটের হিসাবে কংগ্রেস-আরজেডি জোটকে সামনে রেখে এই মন্তব্য করেছেন। স্বয়ং রাহুলও তেজস্বীর মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না।
রবিবার রাহুল গান্ধী বলেন, “আমরা এখন মূলত ভোট চুরি রুখতেই লড়াই চালাচ্ছি। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা আছে, রাজনৈতিক ও আদর্শগতভাবে আমরা একসঙ্গে আছি। কিন্তু এখনই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বা অন্য কোনও নেতৃত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি।” কংগ্রেসের বক্তব্য, জোটের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী কে হবেন, তা নির্ধারিত হবে ভোটের ফলাফলের পরে।
প্রসঙ্গত, তেজস্বী যাদব প্রায় প্রতিটি সভাতেই নিজেকে বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরছেন। বাম দলগুলির পাশাপাশি বিকাশশীল ইনসান পার্টির প্রধান মুকেশ সাহানিও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে কংগ্রেস এখনও এ নিয়ে নিশ্চুপ। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে কংগ্রেসের সমর্থন পেতেই তেজস্বী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে রাহুলের নাম ভাসিয়ে দিয়েছেন। অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে বিরোধী জোটের অভ্যন্তরীণ সমীকরণই এখন বড় রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তেজস্বী যাদব একদিকে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করার ডাক দিচ্ছেন, অন্যদিকে কংগ্রেস জানাচ্ছে, এখনই সে সময় আসেনি। ফলে আগামী মাসগুলোয় বিরোধী শিবিরে নেতৃত্বের প্রশ্নে টানাপোড়েন আরও তীব্র হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তেজস্বী আগ বাড়িয়ে রাহুলের নাম সমর্থন করলেও বিরোধী শিবিরের বাকিরা এতে রাজি হবেন কি না, উঠছে প্রশ্ন। কারণ এর আগে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেই রাহুলকে সামনে রেখে লড়ার ক্ষেত্রে আপত্তি ছিল অন্যদের। ২০১৪, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ব্যর্থতা, একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবিকে সামনে রেখে রাহুলের নেতৃত্বগুণ নিয়েও প্রশ্ন তোলে অনেকে। পরিবর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মল্লিকার্জুন খড়গে এমনকী সেই সময় ইন্ডিয়া শিবিরে শামিল থাকা নীতীশকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার পক্ষে ভোট পড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.