Advertisement
Advertisement
কারগিল যোদ্ধা

৩০ বছর দেশের সেবা করার পর এটাই প্রাপ্য ছিল? মুক্তির পর মুখ খুললেন কারগিল যোদ্ধা

নিজেকে নাগরিক প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন মহম্মদ সানাউল্লাহ।

"this is what I get after serving the nation", asked Mohammad Sanaullah
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 9, 2019 5:53 pm
  • Updated:June 9, 2019 5:53 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেকে দেশের নাগরিক প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ‘বিদেশি’ আখ্যা পেয়ে ঠাঁই হয়েছিল ডিটেনশন ক্যাম্পে। অবশেষে জামিনে মুক্ত হয়েছেন মহম্মদ সানাউল্লাহ। ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান কারগিল যুদ্ধে দেশের জন্য লড়েছিলেন। কিন্তু অসম সরকার অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে তাঁকে ডিটেনসন ক্যাম্পে রেখেছিল। ৩০ বছর দেশের সেবা করা কারগিল যোদ্ধা জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের হতাশার কথা জানালেন। বললেন, একজন প্রকৃত ভারতীয় হয়েও দেশের সেবা করার এই প্রতিদান পেয়ে রীতিমতো দুঃখিত সানাউল্লাহ।

Advertisement

১৯৬৭ সালে মহম্মদ সানাউল্লাহর জন্ম। তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি। ৩০ বছর সেনাবাহিনীতে থাকার পরে ২০১৭ সালে অবসর নেন৷ এরপর এএসআই হিসেবে সীমান্ত শাখায় যোগ দেন। তার সব তথ্যপ্রমাণই জমা দেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনীতেও পুলিশে যোগ দেওয়ার সময়ে তাঁর নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়। তবে বিচারক জানান, শুনানির সময় সানাউল্লাহ ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদানের কথা বলেছিলেন৷ তাই ভুল তথ্য দেওয়ার অপরাধেই তাঁকে ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যমনস্কতায় সানাউল্লাহ ভুল তথ্য দিয়ে ফেলেছেন বলেই দাবি করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার আজমল হক৷ তাঁর অভিযোগ, আদালত জোর করে দেশের জন্য কাজ করা এক প্রাক্তন সেনাকর্মী ও রাজ্য পুলিশের এএসআইকে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে৷ এই বিষয়ে কেন্দ্র ও অসম সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত৷

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘৩০ বছর দেশের সেবা করার পর এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখ দেয়। এটাই কি প্রাপ্য ছিল আমার? কিন্তু আমার এই ঘটনা গোটা দেশের চোখ খুলে দেবে। সুবিচার হবেই। কোনওদিন ভাবতে পারিনি আমার মতো একজন প্রকৃত ভারতীয়কে বিদেশি তকমা দিয়ে ডিটেনসন ক্যাম্পে পাঠানো হবে।’ গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে ১২ দিন কাটিয়েছিলেন সানাউল্লাহ। নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানালেন, ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে এমন অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে যাঁরা অন্তত ১০ বছর ধরে বন্দি। অনেকেই বৃদ্ধ। অনেকেরই আমারই মতো দশা ছিল। যেন আজীবনের শাস্তিভোগ। এ দুর্দশা চোখে দেখা যায় না। ডিটেনশন ক্যাম্পে বহু মানুষ বিভীষিকাময় জীবন কাটাচ্ছেন।’

আইনের উপর আস্থা রেখেই সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ‘আমি হাই কোর্টের উপর কৃতজ্ঞ। বিচারব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমার।’ তাঁর ছেলে শাহিদ জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁরাও বিস্মিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন, দেশে এনআরসির নামে কী হচ্ছে তা যেন তিনি খতিয়ে দেখেন। আদালতের নির্দেশে সানাউল্লাহ জামিন পেতেই ইদের খুশিতে মেতে ওঠে তাঁর পরিবার। বিরিয়ানি-ক্ষীর খেয়ে তাঁরা পরিবারের মাথার মুক্তি উদযাপনে মেতেছিলেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ