সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসানে আবেগের বিস্ফোরণ। প্রিয় তারকাদের কাছ থেকে দেখার হাতছানি। বিনামূল্যে বিজয়োল্লাসে শামিল হওয়ার সুযোগ। ঠিক কীভাবে ঘটল বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনের দুর্ঘটনা? নেপথ্যে প্রশাসনের গাফিলতি যে রয়েছে সেটা অবশ্য অস্বীকার করছে না পুলিশ। তবে ঘুরিয়ে রাজ্য প্রশাসন দোষী ঠাওরেছে আবেগের ভেসে যাওয়া সমর্থকদেরই।
বুধবার কোহলিয়ানার সেলিব্রেশন চাক্ষুষ করতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে পালে-পালে জনতা জড়ো হচ্ছিলেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় বাড়তে থাকে যানজট। যদিও স্টেডিয়ামের ভিতরে প্রবেশের আলাদা পাস দিয়েছিল কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু, অনুষ্ঠান দেখতে কয়েক লক্ষ মানুষ চলে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। ফলে ভিড় সামলাতে নাজেহাল অবস্থা হয় তাঁদের। স্টেডিয়ামের গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য মানুষ দ্রুত ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ছবিটা মুহূর্তে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে। প্রাণে বাঁচতে সমর্থকরা একে-অপরকে টপকে পালাতে যান। সমস্যা আরও বাড়ে। আর তখনই ঘটে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
সরকারের দাবি, বিনামূল্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়াটাই কাল হয়েছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৩ হাজার। কিন্তু সেখানে দু’তিন লক্ষের বেশি মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। তার ফলে স্টেডিয়ামের ছোট দরজা ভেঙে যায়। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার দাবি, “এত মানুষ চলে আসবেন, আমরা ভাবতে পারিনি। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৩৩ হাজার। সেখানে দু’তিন লক্ষ মানুষ ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। স্টেডিয়ামের দরজাটাও ছোট। ভিড়ের ঠেলায় তা ভেঙে যায়। এই জমায়েত কেউ আশা করেননি।” ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার। তিনি জানান, “পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ৫০০০ নিরাপত্তারক্ষী ছিল। কিন্তু আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তাঁর সাফাই, “বহু মানুষের ভিড় হয়েছে। সকলেই খুব আবেগপ্রবণ। কম বয়সি ছেলে-মেয়েদের উপর তো আর লাঠি চালানো যায় না।” কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আবার দাবি, অনুষ্ঠান দেখতে প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ জমায়েত করেছিলেন।
সরকার যাই বলুক, প্রত্যক্ষদর্শীরা পুরোপুরি অব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ, মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, ছিল না ন্যূনতম ব্যবস্থাপনা। পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আবার আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌছে দেওয়ার মতো অ্যাম্বুল্যান্সও ছিল না। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল কিছু ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশকর্মীরা আহতদের কোলে করে নিয়েই ছুটছেন। আবার কাউকে কাউকে ওই ভিড়ের মধ্যেই সিপিআর দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত গাফিলতির জায়গাটা স্পষ্ট। ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের পর্যবেক্ষণে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.