ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘বাংলা যাঁদের মাতৃভাষা, তাঁরা নিজেদের বিদেশি হিসাবেই পরিচয় দিচ্ছেন।’ অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার এই মন্তব্যে ফুঁসে উঠল তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, “বিজেপি সর্বত্র বাঙালিদের ঘৃণা করে।” দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও বিঁধলেন ‘বাংলাবিরোধী’ গেরুয়া শিবিরকে।
আসলে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ভাষা বিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে অসমে। সম্প্রতি অসমের এক সংখ্যালঘু নেতা সে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, আসন্ন জাতিগত জনগণনায় তাঁরা যেন নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে ‘অসমীয়া’কে না বেছে নিয়ে বাংলাকে বেছে নেয়। তাতে করে অসমীয়ারাই অসমে সংখ্যালঘু হয়ে যাবেন। ওই সংখ্যালঘু নেতার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আরও বিতর্কিত মন্তব্য করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি বলেন, “অসমে অসমীয়াই স্থায়ী। এটাই সরকারি ভাষা, এটাই রাজ্য ভাষা। কিন্তু কেউ যদি বাংলাকে নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে দেখায়, তাহলে শুধু এটাই বোঝা যাবে যে রাজ্যে কতজন বিদেশি রয়েছে।” স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে যায়, তাহলে কি বাংলাভাষী মানেই তাঁদের বিদেশি হিসাবে দেগে দিতে চাইছেন হিমন্ত?
হিমন্তর ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, “প্রথমে অসম সরকার একজন বৈধ নাগরিককে এনআরসি নোটিশ পাঠায়, যিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোচবিহারে বসবাস করছেন। সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলে এখন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলছেন, আদমশুমারি পত্রে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা লেখা দেখলেই অসমে বিদেশিদের সংখ্যা বোঝা যাবে। এই বিদ্বেষের উৎস কোথায়? কেন এত ঘৃণা বাঙালি ও বাংলা ভাষার প্রতি? শুধুমাত্র এই কারণে কি, যে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করে অপমানিত করেছে?” শাসকদলের হুঁশিয়ারি, “ঘৃণা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং বহিরাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যদি বাংলাকে দখল করতে চাও, তবে আমাদের করুণা রইল তোমাদের জন্য। বাংলার মানুষ এবার আরও বেশি জনসমর্থন নিয়ে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবে।”
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। তিনিও সোশাল মিডিয়া পোস্টে প্রশ্ন তুললেন, “এসব কী চলছে? একটা বাঙালীবিরোধী, বাংলাবিরোধী দল বিজেপি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা নয়? পশ্চিমবঙ্গবাসী, ভারতবাসী নই?” কুণালের প্রশ্ন, “আর যদি ওরা বাংলাদেশের কথা বলে, তাহলে অমিত শাহর বিএসএফ থাকতে বেআইনি অনুপ্রবেশ হয় কী করে? কার দায়? সেসব এড়িয়ে বাংলা বললেই বিদেশী দাগিয়ে দেওয়া হবে?”
“মাতৃভাষা বাংলা লিখলেই বোঝা যাবে আসামে কত বিদেশি আছে।” – আসামের মুখ্যমন্ত্রী।
এসব কী চলছে? একটা বাঙালীবিরোধী, বাংলাবিরোধী দল বিজেপি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা নয়? পশ্চিমবঙ্গবাসী, ভারতবাসী নই? আর যদি ওরা বাংলাদেশের কথা বলে, তাহলে অমিত শাহর বিএসএফ থাকতে বেআইনি অনুপ্রবেশ হয় কী করে?…— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.