কর্ণগড়ের ধ্বংসাবশেষ।
নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: কর্ণগড়ের রানি শিরোমণির নাম জাতীয় ইতিহাসের পাতায় তোলার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় সংসদের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে রাজনাথের কাছে এই দাবি জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে ভারতীয় সেনায় মহিলাদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত আলোচনার সময়েই সুখেন্দু উল্লেখ করেন, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই বা বেগম হজরত মহলের নাম সকলে জানে। কিন্তু তার বহু আগেই যে বাংলার বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি ব্লকের কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, সেই তথ্য অনেকেরই অজানা। কেন ভারত সরকারের তরফে এই সমস্ত বিস্মৃত বীরাঙ্গনা ও বীরদের ইতিহাস নথিভুক্ত করা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের যে ইতিহাস বিভাগ রয়েছে সেখানে রানি শিরোমণি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এমন বহু বীরগাথা সংগ্রহ করে পুস্তিকা ছাপানো ও তা প্রচারের পরামর্শ দিয়েছেন সুখেন্দু। এই সমস্ত বীরদের ইতিহাস নথিভুক্ত করা না হলে তাঁদের কথা মানুষ জানবে না তো বটেই, কালের গর্ভে তা হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে কেন্দ্রের এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া উচিত বলেও জোরালো সওয়াল করেছেন সুখেন্দু। সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদের প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে শুনে এ বিষয়ে বিবেচনারও আশ্বাস দিয়েছেন রাজনাথ।
উল্লেখ্য, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে ১৭৮৮-’৮৯ সালে প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে কৃষক-সহ ভূমিজ সন্তানদের একজোট করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি। যা দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত। কেন্দ্র গুরুত্ব না দিলেও কর্ণগড়ে যে রানি শিরোমণির গড় রয়েছে, তাকে রাজ্যের হেরিটেজ কমিশনের পক্ষ থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। রানি শিরোমণি ও তাঁর সহযোদ্ধাদের সংগ্রামের ইতিহাস বাংলার পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এদিকে, অপারেশন সিঁদুরের পরে এদিনই প্রথমবার প্রতিরক্ষা পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে কেন অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রস্তাব আনা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেও সরকারকে বিব্রত করেছেন সুখেন্দু।
আগামী সপ্তাহে সংসদে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রস্তাব আসতে চলেছে বলেই আর আলাদা করে বৈঠকে তা আনা হয়নি বলে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন রাজনাথরা। দেশে সৈনিক স্কুলের সংখ্যা বাড়ানোর জন্যও জোরালো সওয়াল করেছেন সুখেন্দু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.