সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসদের বাদল অধিবেশনের বেশিরভাগটাই কেটেছে বিশৃঙ্খলায়। বিহারের SIR, ট্রাম্পের শুল্ক, প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণ এবং সর্বোপরি ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার মতো একাধিক ইস্যুতে নিয়মিত বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। সেই বিক্ষোভে যে কংগ্রেসকে ছাপিয়ে তৃণমূলই নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে, সেটা বোঝা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথাতেই। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংসদে বিশৃঙ্খলার জন্য প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের থেকে বেশি দায়ী করলেন তৃণমূলকেই।
সংবাদসংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিজিজু সাফ বলে দিয়েছেন, “আমি অশান্তির জন্য কংগ্রেস সাংসদদের দোষ দিতে চাই না। তাঁরা তাঁদের দলনেতার নির্দেশ কাজ করে। কিন্তু তৃণমূল কাজ করে কলকাতা থেকে যে নির্দেশ আসে সেই নির্দেশ মেনে।” সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে নির্দেশ দিলে, সেটা মানতে সাংসদরা বাধ্য হন। ওরা হয়তো নিজেরা এক কথা বলেন, কিন্তু অন্যরকম কাজ করতে বাধ্য হন। এখানে বিশৃঙ্খলা করতে বাধ্য হন।”
আসলে গত বুধবার লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। ওই বিলগুলি মূলত সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে আনা। প্রস্তাবিত ওই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপদে আসীন অবস্থায় কেউ যদি গুরুতর অপরাধে ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন তাহলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে। কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবির বিলটির বিরোধিতা করেছে। বুধবার শাহের বিল পেশের সঙ্গে সঙ্গে তুমুল হট্টগোল শুরু করে বিরোধী শিবির। ওয়েলে নেমে প্রতিবাদে শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিলের কপি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা অমিত শাহর দিকে বিলের কপি ছুড়ে দেন। তৃণমূলের দেখাদেখি অন্য বিরোধী সাংসদরা আসরে নামেন।
বস্তুত, পুরো বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিল তৃণমূলই। কিরেন রিজিজুর দাবি, আগে থেকেই আলোচনায় ঠিক হয়েছিল অমিত শাহ যখন সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন তখন কেউ ওয়েলে নামবে না। গোটা সদন শান্ত রাখা হবে। তৃণমূলও তাতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু পরে মমতার নির্দেশে সিদ্ধান্ত বদল হয়। ওয়াকিবহাল মহল বলছেন, দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের কেন্দ্রবিন্দুতে তৃণমূল যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে, সেটা কিরেন রিজিজুর এই ‘তৃণমূল ভীতি’ থেকেই প্রমাণিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.