সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাথমিক তদন্তে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার দায় পাইলটের উপরে চাপিয়েছিল তদন্তকারীরা। সোমবার সেই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘পাইলটের উপর দোষ চাপানো’র ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার ও ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে নোটিস পাঠিয়ে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
গত ১২ জুন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে রানওয়ে ছাড়ার পরপরই একটি মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলের আছড়ে পড়ে সেটি। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় ২৬০ জনের। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর গত জুলাই মাসে ‘এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (এএআইবি) দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করে। যেখানে দাবি করা হয় বিমানের জ্বালানি সুইচ হঠাৎ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার আগে ককপিটে থাকা দুই পাইলটের কথোপকথন সামনে আসে। যেখানে একজন পাইলট বলছেন, ‘কেন তুমি বন্ধ করলে।’ উত্তরে অন্যজন বলেন, ‘আমি করিনি।’
এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। যেখানে মামলাকারীর আবেদন ছিল, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বহু তথ্য গোপন করা হয়েছে। জ্বালানি সুইচে সমস্যা ও যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনাগুলি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকী প্রাথমিক তদন্তে পাইলটের দিকেই দুর্ঘটনার দায় চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। ফলে আদালতের নজরদারিতে নিরপেক্ষভাবে দুর্ঘটনার তদন্ত হোক। সোমবার বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এনকে সিংয়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেন, দুর্ঘটনায় ‘পাইলটদের ত্রুটি’র দিকে ইঙ্গিত করা দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। আগামীকাল যদি কোনও পাইলটের দিকে আঙুল তোলা হয় তবে তাঁর পরিবার সমস্যায় পড়বেন। এরপর চূড়ান্ত রিপোর্টে যদি দেখা যায় তাঁদের তরফে কোনও ত্রুটি নেই? তখন কী হবে।” এরপরই এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার ও ডিজিসিএ-কে নোটিস পাঠিয়ে তাদের মতামত জানতে চায় আদালত।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানের প্রস্তুতকারী সংস্থা ছিল বোয়িং। এই সংস্থার একাধিক বিমান এই আগেও দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। ফলে দুর্ঘটনার নেপথ্যে উঠে আসে বোয়িংয়ের যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্ব। তবে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে আসার পর কিছুটা হলেও স্বস্তি পায় বোয়িং। দুর্ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও স্পষ্ট নয় আসল কারণ। যার জেরে এদিন আদালতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি বলেন, “এত ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর ১০০ দিনের বেশি পেরিয়ে গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট রিপোর্ট আসেনি। যা এসেছে তা প্রাথমিক রিপোর্ট। না কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার অর্থ এখনও যারা বোয়িং বিমানে যাত্রা করছেন তাঁরা সকলেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.