সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনওরকম মানসিক সম্পর্ক ছাড়া স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া বা স্ত্রীকে এটিএম (ATM) হিসাবে ব্যবহার করা মানসিক হেনস্তার সমান। পর্যবেক্ষণ কর্ণাটক হাই কোর্টের। এক বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় এই পর্যবেক্ষণ করেছে হাই কোর্ট (Karnataka High Court)। আদালতের মন্তব্য, এই ধরনের ঘটনায় স্ত্রী যে যন্ত্রণার শিকার হন, সেটা মানসিক হেনস্তার সমান। এক ডিভোর্সের মামলায় আদালত এই পর্যবেক্ষণ করছে।
আসলে ১৯৯১ সালে বিবাহিত এক মহিলা সম্প্রতি কর্ণাটকের নিম্ন আদালতে ডিভোর্সের মামলা করেন। ওই মহিলার যুক্তি ছিল, স্বামীর সঙ্গে তাঁর আর কোনও মানসিক সম্পর্ক নেই। অথচ, স্বামী তাঁকে এটিএম হিসাবে ব্যবহার করছে। যা মানসিক নির্যাতনের সমান। ওই মহিলার যুক্তি খারিজ করে নিম্ন আদালত তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতিও দেয়নি। কিন্তু সেই রায়ের বিরোধিতা করে ওই মহিলা কর্ণাটক হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
আসলে ওই মহিলার যখন বিয়ে হয় তখন তাঁর স্বামী ব্যবসা করতেন। কিন্তু কিছুদিন বাদে ব্যবসায় মোটা অঙ্কের লোকসানের মুখ দেখেন তিনি। চরম আর্থিক অনটনে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বাধ্য হয় ওই মহিলা একটি ব্যাংকে চাকরি নেন। তাঁর চাকরির টাকায় সংসার চলা শুরু করে। সেই সঙ্গে ঋণ মেটাতেও স্বামীকে নিয়মিত টাকা দিতে থাকেন ওই মহিলা। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন সেই টাকা নিয়ে তাঁর স্বামী ঋণ শোধ করেননি। নিজের মতো করে নষ্ট করেছেন। তারপর আবার ওই মহিলা নিজের স্বামীকে একটি সেলুন খুলে দেন। পরে জানা যায়, সেই সেলুনেও তিনি কাজ করতেন না। সেই ব্যবসাতেও লোকসান হয় তাঁর।
এরপরই বাধ্য হয়ে ওই মহিলা বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। নিম্ন আদালত তাঁর মানসিক হেনস্তার যুক্তি না মানলেও কর্ণাটক হাই কোর্ট তাঁর যুক্তি মেনে নিয়েছে। কর্ণাটক হাই কোর্ট জানিয়েছে, কোনও মানসিক সম্পর্ক ছাড়া স্ত্রীকে আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবহার করেছেন এই ব্যক্তি। যার ফলে তাঁর স্ত্রী যে মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন, সেটা হেনস্তার সমান। এই যুক্তিতেই ওই মহিলাকে ডিভোর্স নেওয়ার অনুমতি দেয় হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.