সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিছিলে পদপিষ্ট বহু মানুষ। মৃত অন্তত ৩৯। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও অনেকে। তামিলনাড়ুর কারুরে অভিনেতা বিজয়ের রাজনৈতিক মিছিল কার্যত মৃত্যুপুরী। প্রশ্ন উঠছে এর দায় কার? পুলিশ প্রশাসনের? আয়োজকদের নাকি খোদ বিজয়ের? পুলিশ প্রশাসনের নিশানায় অভিনেতা নিজেই।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগামের প্রধান বিজয়ের এই বিজয় মিছিলে ১০ হাজার মানুষ আসতে পারেন বলে মনে করছিলেন আয়োজকরা। সেইমতো অনুমতিও নেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে বাস্তবে দেখা যায়, মাত্র ১.২০ লক্ষ বর্গফুটের এই সমাবেশস্থলে ভিড় জমান ৬০,০০০-এরও বেশি মানুষ। যার জেরেই এই দুর্ঘটনা। সমস্যা তৈরি হয় বিজয় দেরিতে পৌঁছনোয়। নির্ধারিত সময়ের বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে ঘটনাস্থলে যান তিনি। তাতে ভিড় আরও বেড়ে যায়।
বিজয়ের ভাষণ চলাকালীন পর হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সভাস্থলে। এত ভিড় হয়ে যায় যা মানুষের দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। মানুষ একে অপরের গায়ের উপর পড়তে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলছেন, “আমরা ভিড়ে নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল। কিন্তু ভিড়ের চাপে পুলিশও আমাদের সাহায্য করতে পারেনি।” প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, “ভিড় এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছিল যে কারও কিছু করার ছিল না। বিজয় অনেক দেরিতে আসায় সমস্যা বেড়েছে। অনেকে পাঁচ-ছ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন পানীয় জল-খাবার ছাড়া। বিজয়ের গাড়ি আসতেই সবাই একসঙ্গে সেদিকে ঝুঁকে পড়েন।” এরপরই বিজয় বোঝেন যে পরিস্থিতি ক্রমেই মর্মান্তিক হচ্ছে। পুলিশের থেকে ওই মিছিলে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাহায্য চান। বিজয় নিজেও ভিড়ে আক্রান্তদের জলের বোতল দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। ব্যবস্থা করেন অ্যাম্বুলেন্সের, কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।
তামিলনাড়ুর ডিজিপি জি ভেঙ্কটরমন বলছেন, বিজয়ের মিছিলের অনুমতি ছিল বিকেল ৩ টে থেকে ১০টা পর্যন্ত। অথচ তাঁর দলের এক্স হ্যান্ডেলে বলা হয় বিজয় আসবেন ১২টায়। তিনি গিয়ে পৌঁছন ৭টা ৪০ মিনিটে। এতক্ষণ মানুষ অপেক্ষা করেছেন চড়া রোদে। কারও জন্য জল ও খাবারের ব্যবস্থা ছিল না।” পুলিশ প্রশাসন অবশ্য ঘটনার দায় চাপাচ্ছে অভিনেতা বিজয়ের উপরই। তামিলনাড়ুর এডিজিপি জানিয়েছেন, মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, যে পরিমাণ মানুষ জমায়েত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তার তিনগুণ মানুষে চলে আসে। সমবেত জনতার জন্য খাবার ও পানিয়ের ব্যবস্থাও করেনি বিজয়ের দল। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের ঘোষণা, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাঁদের সবরকম শাস্তির ব্যবস্থা করবে তাঁর সরকার। ইতিমধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত হাই কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছেন তিনি। বিচারপতি অরুণা জগদীশন ওই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.