সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্তফা দেওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে একমাসেরও বেশি সময়। তারপর আর তাঁকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। কোথায় আছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়? জাতীয় রাজনীতিতে এটাই এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিংবা কেন্দ্রের শাসকদল এই বিষয়ে উচ্চবাচ্য করতে রাজি না হলেও বিরোধী শিবির ছাড়তে নারাজ। এদিকে গত মাসে প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির স্ত্রী সুদেশ ধনকড় নাকি একাধিকবার গাড়ি করে রাজস্থানে গিয়েছেন। কিন্তু কেন? কোথায় এবং কী পরিস্থিতিতেই বা রয়েছেন ধনকড়?
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত বছর থেকে দিল্লির যে বাসভবনে থাকছিলেন, বর্তমানে সেখানেই রয়েছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্ত্রী। নতুন বাংলো বরাদ্দের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা। ইস্তফা দেওয়ার পরদিনই নাকি জমাকাপড় গোছানো শুরু করে দিয়েছিলেন ধনকড় এবং তাঁর স্ত্রী। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিবারের সঙ্গে অবসরজীবন খুব ভালো করেই কাটাচ্ছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি। সুস্থ রয়েছেন তিনি। দেখছেন ওটিটিও। প্রতিবেদনটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, গত মাসে ধনকড়ের স্ত্রী সুদেশ গাড়ি করে অন্তত তিনবার রাজস্থানের জয়পুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কেন? জানা গিয়েছে, জয়পুর বিমানবন্দর থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে তাঁদের একটি জমি রয়েছে। সেখানে একটি বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। সেটি দেখাশোনার জন্যই বারবার রাজস্থান যেতে হচ্ছে সুদেশকে।
গত ২১ জুলাই হঠাৎ নিজের পদ থেকে ইস্তফা দেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। তাঁর এই ইস্তফা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয় জাতীয় রাজনীতিতে। এই ইস্তফার কারণ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেন তিনি। তবে একদিন আগেও যিনি সংসদে বহাল তবিয়তে কাজ করেছেন। অতীতে অসুস্থ হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে যিনি সংসদের কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁর এমন ইস্তফা স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা বাড়ায়। বিরোধীরা অভিযোগ করে মোদি সরকারের চাপের মুখে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন ধনকড়। সেই জল্পনার মাঝেই কার্যত নিখোঁজ হয়ে যান প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, ধনকড় তো বটেই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে কী ঘটেছে? তিনি কোথায় রয়েছেন? তিনি কি নিরাপদে আছেন? তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন সঞ্জয় রাউত। জল্পনা শুরু হয়, মোদি সরকারের ভাঁড় ভাঙতে উদ্যোগী হওয়ায় তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করা হয়েছে।
এই বিতর্কের মাঝেই সোমবার সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জগদীপ ধনকড় প্রসঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, “জগদীপ ধনকড় একটি সাংবিধানিক পদে ছিলেন। নিজের কার্যকালে সংবিধান মেনে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। ফলে এই বিষয়টিকে নিয়ে অযথা লেবু কচলানোর কোনও প্রয়োজন নেই। বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করাও উচিত নয়। তিনি তাঁর সুন্দর কার্যকালের জন্য প্রধানমন্ত্রী-সহ সরকারের সকল পদাধিকারিকদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন।” নানা জল্পনা দিল্লির রাজনীতিতে মাথাচাড়া দিলেও সেসব খারিজ করে শাহ। এই পরিস্থিতিতে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হল, অবসরজীবন স্বাচ্ছন্দ্যেই কাটাচ্ছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.