সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা চলেছিল ২২ এপ্রিল। তারপর থেকে যত দিন গিয়েছে মোদি সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছে দেশবাসীর পাশাপাশি বিরোধী শিবির। প্রশ্ন উঠেছে, পাকিস্তানকে উচিতশিক্ষা দিতে কেন এত বিলম্ব? অবশেষে মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরে নেমে এল মারণ প্রত্যাঘাত। কিন্তু কেন এতদিন অপেক্ষা করল ভারত? বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে তারই কিছুটা আভাষ দিলেন বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই হামলার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিদেশ সচিব। তিনি জানান, “২৬/১১ মুম্বই হামলার পর পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ভারতের মাটিতে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা। যেখানে পরিবারের সামনে পুরুষদের মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হামলা কাশ্মীরের উন্নয়নের উপর হামলা। যার দায় নিয়েছে লস্কর ও জইশের ছায়া সংগঠন টিআরএফ। তাদের বিরুদ্ধেই চলেছে এই প্রত্যাঘাত।” হামলার ঘটনায় যে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে তা শুরু থেকেই জানিয়েছিল ভারত। হাতে এসেছে প্রত্যক্ষ প্রমাণও। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে মিশ্রি জানান, “পাকিস্তানকে সবটা জানিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে ওদের তরফে পদক্ষেপ তো দূরের কথা, উলটে এই ঘটনায় পাকিস্তান যোগের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে তারা।”
জানা যাচ্ছে, ১৫ দিনের এই অপেক্ষার নেপথ্যে আসলে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য সময় দিয়েছিল ভারত। যদিও পাকিস্তান যে কোনও পদক্ষেপ করবে না তা জানাই ছিল। সেইমতো শুরু হয় প্রস্তুতিও। পাকিস্তানকে ভারতের তরফে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে নেমে আসে প্রত্যাঘাত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। হামলার জেরে অন্তত ৮০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। লস্কর ই তইবা, জইশ ই মহম্মদ-সহ একাধিক জঙ্গির আঁতুড় ঘর গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই হামলায় লস্কর ই তইবা প্রধান হাফিজ সৈয়দ ও জইশ প্রধান মাসুদ আজাহারের পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
হামলার সপক্ষে ভারতের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, “পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়। জেনেশুনে নিজের দেশে ওরা জঙ্গিদের লুকিয়ে রাখে। আমাদের কাছে খবর ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে আগামী দিনেও এই ধরনের জঙ্গি হামলা হতে পারে। তাই এই প্রত্যাঘাত আবশ্যক ছিল। এর মাধ্যমে ভারত নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করেছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জবাব দিতে। সন্ত্রাসবাদকে গোড়া থেকে ধ্বংস করতেই এই হামলা।” এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘের বয়ানও তুলে ধরে মিশ্রি বলেন, “গত ২৫ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের হামলার নিন্দা করে রাষ্ট্রসংঘ বলেছিল ন্যায়বিচার দরকার। ভারতের প্রত্যাঘাত তার ভিত্তিতেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.