Advertisement
Advertisement
Kolkata Police

দালালের সাহায্যে দু’মাসে জন্মের ১৭ ভুয়ো শংসাপত্র! গোয়েন্দাদের নজরে গোসাবা, উলুবেড়িয়ার সাইবার কাফে

সামনে এসেছে কলকাতা ও দুই জেলার দালালচক্রের সিন্ডিকেটের কীর্তি।

17 fake birth certificates, Kolkata Police catches sight of cyber cafe in Gosaba, Uluberia
Published by: Suhrid Das
  • Posted:May 27, 2025 1:08 pm
  • Updated:May 27, 2025 1:08 pm   

অর্ণব আইচ: হাতে হাতে মোবাইল। আর তার সঙ্গে ল‌্যাপটপের ব‌্যবহার চাহিদা কমিয়েছে সাইবার কাফের। কিন্তু এবার দুই জেলার দুই সাইবার কাফেই গোয়েন্দাদের নজরে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের দাবি, ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরির ‘আঁতুড়ঘর’ হয়ে উঠেছে দুটি জেলার দুই গ্রাম। আর গ্রামেই থাকা সাইবার কাফে থেকে ‘জন্ম’ নিচ্ছে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র। সেজন‌্য খরচ হচ্ছে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতেই সামনে এসেছে কলকাতা ও দুই জেলার দালালচক্রের সিন্ডিকেটের কীর্তি।

Advertisement

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র ব‌্যবহার করে একের পর এক পাসপোর্টের জন‌্য আবেদন করা হচ্ছে। আর তাতেই গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ছে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র বা বার্থ সার্টিফিকেট। কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের গোয়েন্দাদের কাছে আসে খবর অনুযায়ী, গত দু’মাসে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র নিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করা সংক্রান্ত বিষয়ে অন্তত ১৭ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ব‌্যাপারে তদন্ত করে গোয়েন্দারা দেখেছেন যে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা অঞ্চলের পাঠানখালি ও হাওড়ার উলুবেড়িয়া অঞ্চলের বাসুদেবপুর গ্রাম থেকে বের করা হয়েছে ভুয়ো শংসাপত্র। এই ব‌্যাপারে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে ওই জেলার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়। এসসিও-র গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, গোসাবার পাঠানখালির পঞ্চায়েতের এক অস্থায়ী কর্মী ওই অফিসে যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরির কাজ করত। একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গোসাবায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাকে গোসাবা থেকে কলকাতায় নিয়ে এসে জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কলকাতার এসসিও-র গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দাদের দাবি, আপাতত ১৭ জনের সন্ধান পেয়ে এতগুলি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন যুবক পাঠানখালি ও বাসুদেবপুর থেকে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরি করেছে। এমন খবরও গোয়েন্দাদের কাছে আসছে। এসসিও-র গোয়েন্দাদের অভিযোগের মূল আঙুল ওই দুই জেলার সাইবার কাফের উপর। গোয়েন্দাদের মতে, সাধারণভাবে এখন ইন্টারনেটের জন‌্য প্রত‌্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদেরও সাইবার কাফেতে যেতে হয় না। প্রায় প্রত্যেকের মোবাইলেই রয়েছে নেট। সেক্ষেত্রে সাইবার কাফে এখনও যাঁরা চালান, তাঁদেরও ব‌্যবসার অবস্থা ভালো নয়। সেক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের অভিমত, পঞ্চায়েতের কয়েকজন অস্থায়ী কর্মীর সঙ্গে সাইবার কাফের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। ওই সাইবার কাফেগুলিতেই গড়ে উঠেছে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরির ‘কারখানা’। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে, সাইবার কাফের কম্পিউটারে সফটওয়‌্যারে তৈরি হচ্ছে ভুয়ো শংসাপত্র। তার প্রিন্ট আউট বের করছেন দালালরা। পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে তা তুলে দিচ্ছে যুবকদের হাতে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মতো ভিনরাজ্যের কিছু যুবক, যাদের ওই রাজ্যের জন্ম শংসাপত্র নেই, তারা কলকাতা থেকে পাসপোর্ট তৈরির জন‌্য এই দালালচক্রের হাত ধরছে। পুলিশের মতে, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে দালালচক্রের সিন্ডিকেটের সদস‌্যরা। তারা যোগাযোগ রাখে জেলার সিন্ডিকেটের সঙ্গে। তাতেই ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ