দিশা ইসলাম, বিধাননগর: আগেরবার ছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে, আর এবার যদি প্রয়োজন হয় তবে বিজেপির ভেদাভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে গুলি খেতেও রাজি রাজারহাটের আজিজুল। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহাকরণ অভিযানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান। তাই প্রতিবারই একুশের টানে ছুটে আসেন ধর্মতলায়। এবারও আসার আগেই নিজের বাড়িতে বসে আজিজুল বলেন, “আগে ছিল অত্যাচারী সিপিএম, এখন আমাদের আন্দোলন বিভেদকামী বিজেপির বিরুদ্ধে। এই অশুভ শক্তি রুখতে দিদির ডাকে শহিদ হতেও রাজি।”
৩২ বছর আগে প্রতিবাদের সময় পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী শহিদ হয়েছিলেন। অনেকেই জখম হন। সেদিন যাঁরা গুলি ও লাঠির আঘাতে জখম হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেই একজন রাজারহাটের আজিজুল ইসলাম মোল্লা। তাঁর বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো শুভেচ্ছাপত্র। ১৯৯৩ সালে রাজারহাটের আজিজুল ইসলাম মোল্লা। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৩। রাজারহাট ব্লকের পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাপনা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুলের শরীরে এখন ৫৫ বছরের ভার। তাঁর ডান উরুতে এখনও গুলির ক্ষত স্পষ্ট।
স্মৃতি হাতড়ে আজিজুল বলছিলেন, “তৎকালীন যুব কংগ্রেস সভানেত্রী দিদির ডাকে ধর্মতলার মেট্রো সিনেমার কাছে পৌঁছতেই পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণের আওয়াজ পাই। গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেককে চোখের সামনে লুটিয়ে পড়তে দেখেছি। প্রাণভয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগেই আমার ডান পায়ের উরুতে গুলি লাগে। জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ি। টানা ১৬ দিন এস এস কে এম হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ফিরে এসেছি।” গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ২৪ জুলাই নেত্রীর চিঠি এসেছিল। আজিজুলের পাশে দাঁড়িয়ে ‘কেউ মনে রাখেনি’ আক্ষেপের কথাও শোনালেন তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বিবি। বলছিলেন, “স্বামী নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। কিন্তু কোমরের কাছে গুলির আঘাতে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেন না। ফলে কাজটাও হারিয়েছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.