প্রতীকী ছবি
অর্ণব আইচ: চিটফান্ডে বিপুল টাকা লাভের টোপ উপকূলরক্ষী বাহিনী-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবারের সদস্যদের। এই ফাঁদ পেতেই একাধিক চিট ফান্ড সংস্থার মাধ্যমে আমানতকারীদের লগ্নি করিয়ে ৩২ কোটি টাকা হাতানো হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় সাড়ে চারশো আমানতকারীর কাছ থেকে ওই বিপুল টাকা হাতানো হয়েছে, যাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ সেনা ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবারের বলেই অভিযোগ। এমনকী, বিপুল লভ্যাংশের টোপ দিয়ে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত উপকূলরক্ষী বাহিনীর আধিকারিককে চিটফান্ডের ডিরেক্টরও বানানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই টাকা চাইতে গেলে তাঁদের হুমকির মুখে পড়তে হয়। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা উপকূলরক্ষী বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক এই ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। পূর্ব কলকাতার ফুলবাগান থানায় এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ওই প্রতারণার শুরু। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর ওই অবসরপ্রাপ্ত আধিকারক ওই সময় কলকাতায় কর্মরত ছিলেন। তখন নিউটাউনে উপকূলরক্ষী বাহিনীর অফিসে এক ব্যক্তি গাড়ি ভাড়া দিতেন। সেই সুবাদে ওই ব্যক্তির ওই অফিসে যাতায়াত ও আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তার সূত্র ধরেই পূর্ব কলকাতার ফুলবাগান এলাকার এক বাসিন্দা বাহিনীর দপ্তরে যান। ওই ব্যক্তি নিজেকে অন্তত পাঁচটি বড় সংস্থার কর্ণধার বলে দাবি করেন। হোটেল থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার আড়ালে চলছিল চিট ফান্ডেরই কারবার চলছিল বলে অভিযোগ।
ওই প্রাক্তন আধিকারিকের অভিযোগ, আমানতকারীদের বলা হয় যে, অন্তত পাঁচটি বহুজাতিক সংস্থা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাটি কয়েক কোটি টাকার বরাত পেয়েছে। তাই ওই সংস্থাগুলিতে লগ্নি করলে বিপুল টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। অভিযোগ, আমানতকারীদের সামনে ভুয়া নথি তুলে ধরা হয়। তাতে দেখা যায়, একটি নামী সংস্থার আট কোটি টাকার বরাতের জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক দশ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এরকম বহু জাল নথি দেখানো হয় আমানতকারীদের। এভাবে উপকূলরক্ষী বাহিনী-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিক ও প্রাক্তন আধিকারিকের পরিবারের লোকেদের ফাঁদে ফেলা হয়। তাঁরা ক্রমে বিপুল টাকা লগ্নি করতে শুরু করেন ফুলবাগানের ওই ব্যক্তির চিট ফান্ডে। অভিযোগকারী নিজেও ২৪ লক্ষ টাকা লগ্নি করেন। ওই পরিমাণ বেড়ে হয় ৫২ লাখ টাকা।
বলা হয়, কয়েক বছরের মধ্যেই লভ্যাংশের বিপুল টাকা দেওয়া হবে। আরও টাকার লোভ দেখিয়ে অভিযোগকারী ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে দু’টি সংস্থার ডিরেক্টরের পদেও রাখা হয়। কিন্তু ওই সংস্থাগুলির কার্যকলাপে তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের সামনে রেখে চিট ফান্ডের কর্ণধাররা বিপুল টাকা তছরূপ করছে। তাঁরা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজে অভিযোগ জানান। কিন্তু তখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ততদিনে প্রায় ৪৫০ জন আমনতকারীর কাছ থেকে তোলা হয়েছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা, অভিযোগ এমনই। গত মার্চ মাসে আমানতকারীরা ওই টাকা চিট ফান্ডের কর্ণধারের কাছে ফেরত চান। কিন্তু টাকা দেওয়ার বদলে তাঁদের লোক দিয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কোনও টাকা ফেরত না পেয়ে সম্প্রতি ওই প্রাক্তন উপকূলরক্ষীবাহিনীর আধিকারিক ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারই ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তকে তলব করে জেরার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.