সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরপর তিনবার ক্ষমতায়। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। একাধিক ইস্যুতে কাদা ছোড়ার চেষ্টায় বিরোধীরা। তা মোকাবিলায় অস্ত্র স্রেফ উন্নয়ন। আর সেই মন্ত্রেই দিনের পর দিন জনসমর্থন বাড়ছে তৃণমূলের। এই আবহে একুশের শহিদ সমাবেশ মঞ্চ থেকে ঠিক কী বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেদিকে নজর সকলের।
দুর্নীতি ইস্যুতে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারি:
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর একে একে জেলে যেতে হয় অনুব্রত মণ্ডল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো শীর্ষস্তরের নেতা-মন্ত্রীদের। যদিও বারবার তৃণমূল দাবি করেছে, গ্রেপ্তারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বর্তমানে জামিনে মুক্ত জ্যোতিপ্রিয়, অনুব্রতরা। সুতরাং গ্রেপ্তারি যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অতিসক্রিয়তা’ ছাড়া আর কিছু নয়, তা যেন প্রমাণিত সত্য।
২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল:
সুপ্রিম কোর্টের এক কলমের আঁচড়ে চাকরিহারা ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। তাঁদের পাশে রাজ্য সরকার। চাকরিহারা শিক্ষকদের ডিসেম্বর পর্যন্ত সবেতন চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আর জি কর:
আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুন হন তরুণী চিকিৎসক। এই ঘটনার পরই কলকাতা পুলিশ সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে। পরে সিবিআই ঘটনার তদন্তভার নেয়। তবে কলকাতা পুলিশের তদন্তেই সিলমোহর দেয় সিবিআই। সঞ্জয় ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে।
কসবা কাণ্ড:
কসবার আইন কলেজে তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনাতেও তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানে জেলবন্দি অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-সহ আরও অনেকে। কলেজে কলেজে যাতে কোনও অসামাজিক কাজ না হয়, সেদিকেও কড়া নজর রাখা হয়েছে। আবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশমতো কলেজে কলেজে ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিও তুঙ্গে।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও উন্নয়ন:
একশো দিনের প্রকল্পের কাজ, বাংলার বাড়ির টাকা আটকে দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বরাবর সরব তৃণমূলর। তবে তা সত্ত্বেও রাজ্যে থমকে নেই উন্নয়ন। শ্রমিকদের সুরাহায় একশো দিনের কাজে কর্মদিবস বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। আর বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকাও ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছেন উপভোক্তারা।
বাঙালি অস্মিতা:
ভোটব্যাঙ্ককে মজবুত করতে রাজ্যে নাকি অবাধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে, উঠেছে এমনই অভিযোগ। তবে সে অভিযোগ কার্যত সারবত্তাহীন। কারণ, সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিএসএফের। তাই অনুপ্রবেশ হওয়া মানে নিরাপত্তায় ফাঁকফোকর রয়েছে। আবার সম্প্রতি বাংলায় কথা বলায় ভিনরাজ্যে হেনস্তার শিকার হচ্ছে বাঙালি। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা হাই কোর্টও। কেন্দ্রের জবাবও তলব করা হয়েছে। হেনস্তা সহ্য করবেন না বলেই হুঁশিয়ারি ‘দিদি’র। তিনি সাফ জানিয়েছেন, আরও বেশি করে বাংলায় কথা বলবেন, প্রয়োজনে তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হোক।
একাধিক ইস্যুতে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর একুশের মঞ্চ থেকে ছাব্বিশের লক্ষ্যে ঠিক কী বার্তা দেন ‘দিদি’, তা শুনতে সব পথই যেন এখন ধর্মতলামুখী। সময় যত গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে ভিড়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.