ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতায় কংগ্রেসের সদর দপ্তর বিধান ভবনে বিজেপি নেতার তাণ্ডব, আর তার প্রতিবাদে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে রিপোর্ট নিল কংগ্রেস হাইকমান্ড। শুক্রবারের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার রাজাজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে কংগ্রেস। কলকাতায় প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের নেতৃত্বে বিধান ভবন থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল হয়। কিন্তু কলকাতায় এসে শুভঙ্করের পাল্টা কর্মসূচি নিলেন প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি। তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি হলেও, কলকাতাতেই যেখানে প্রদেশ নেতৃত্ব এত বড় ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচি করছে, সেখানে একবারের জন্যও সেই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া বা বিধান ভবনে ঘুরে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি অধীর। যা এদিন দিনভর চর্চায় ছিল শুধু না, দলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নজর এড়ায়নি এআইসিসি নেতৃত্বেরও। মূল ঘটনা এবং তার জেরে প্রতিবাদের নামে এই প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সবটাই এআইসিসি নেতৃত্ব পর্যবেক্ষণে রেখেছে। একটি সূত্রের দাবি, ছাব্বিশের প্রস্তুতির জন্য পুজোর আগেই সমস্ত পদাধিকারী ও শাখা সংগঠনের নেতৃত্বকে ডেকে একদফা বৈঠক সারতে চাইছে হাইকমান্ড। যে বৈঠকে থাকতে পারেন রাহুল গান্ধী নিজে। হাইকমান্ড বারবার যেখানে নেতৃত্বকে একজোট হয়ে লড়াইয়ের কথা বলছে, সেখানে অধীরের এই ‘পাল্টা’ কর্মসূচির ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হতে পারে দিল্লিতে।
এদিকে মূল ঘটনার পর দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে ধরতে পারেনি পুলিশ। অথচ গা ঢাকা দিয়েও সে ফেসবুক লাইভ করে চলেছে। তার শাগরেদদের মধ্যে ধরা পড়েছে তিনজন। বিজয়প্রসাদ ধানুক, সন্তোষকুমার রাজভড়, দিব্যেন্দু সামন্ত নামে ধৃত তিনজনকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ২০-২৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাকেশের খোঁজে ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকায় তার বাড়িতেও যায় পুলিশ। কিন্তু সে বেপাত্তা। যা নিয়ে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “কংগ্রেস দপ্তরে এই হামলা আমরা সমর্থন করি না। ক্ষোভ থাকলেও প্রতিবাদে সবারই সংযত থাকা উচিত। অভিযুক্তদের ধরা হবে। আর এরা এত বড় বিপ্লবী। সকালে এসে কালি লাগাচ্ছে পরে অজ্ঞাতবাসে পালিয়েও যাচ্ছে!”
এদিকে শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘হামলার এই সংস্কৃতি কোনওদিন বাংলার মাটিতে ছিল না। বিজেপি এসব আমদানি করছে। যে কোনও উপায়ে আমাদের তা রুখতে হবে। বহুত্ববাদী ধারণাই আমাদের সংবিধানের নির্যাস। কংগ্রেস এই ধারণাকেই লালন করে এসেছে। অন্যদিকে, অধীর প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিবাদে না এলেও খিদিরপুরে নিজের একটি কর্মসূচি থেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, “বিধান ভবন থেকে থানার দূরত্ব ১০০ মিটার, তাও পুলিশ আসতে পারল না। এই আক্রমণ ঠেকাতে পারল না। একই এলাকায় তৃণমূলের ঠেকে হামলা হলে পুলিশ কি রক্ষা করতে আসত না।” রাহুল গান্ধীর কর্মসূচি চলাকালীন পাশের রাজ্যেই এমন একটি ঘটনা এবং সেই ঘটনায় পাশা রোষের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কলকাতা তো বটেই, রাজ্যজুড়ে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটতে দেওয়া হয়নি বলে প্রদেশ নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসাও করেছে হাইকমান্ড। প্রদেশ নেতৃত্বের বক্তব্য, পাল্টা হিংসা কখনওই কাম্য নয়। আর তেমন ঘটলে তার পুরো দায় রাহুল গান্ধীর উপরই গিয়ে পড়ত। তিনি যেখানে সংবিধানের জন্য গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের পথে, সেখানে বিজেপির হিংসার পাল্টা হিংসা তাঁকেই কালিমালিপ্ত করত। এদিনই আবার বাংলা পক্ষের নেতা গর্থ চট্টোপাধ্যায় আগেরদিনের বাঙালি-অবাঙালি ইস্যুতে বাসাকে সামনে রেখে মিছিল করেন। গলায় রক্তজবার মালা পরে এন্টালি থানায় ডেপুটেশন দেন গর্গরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.