সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথাগত ধারণাকে ভেঙে দিয়ে ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (IEM) তাদের ২০২৫ সালের বি.টেক ব্যাচের শিক্ষাবর্ষ শুরু করল এক অভিনব কায়দায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হল নতুন বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের। কলকাতার গুরুকুল ক্যাম্পাসে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছিলেন প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা।
এ রাজ্যের অন্যতম নামী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে IEM নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু করল ১ জুলাই, ২০২৫। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শত শত নতুন শিক্ষার্থীর জন্য প্রযুক্তির এক নয়া ধাপের সঙ্গে পরিচয় করানো হল তাঁদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন IEM-UEM গ্রুপের বিশিষ্ট সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক বনানী চক্রবর্তী (সভাপতি, IEM-UEM গ্রুপ), ড. সত্যজিৎ চক্রবর্তী (ডিরেক্টর, IEM এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, UEM), গোপা গোস্বামী (ডিরেক্টর, কর্পোরেট রিলেশনস), ড. রাজাশ্রী পাল (ডিরেক্টর, IQAC), ড. অরুণ কুমার বার (অধ্যক্ষ, IEM), এবং ড. প্রবীর কুমার দাস (বিভাগীয় প্রধান, বেসিক সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ) প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
কলেজের প্রবেশপথে AI হিউম্যানয়েড রোবটগুলি আগত শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে চমকে দেয়। AI রোবটগুলি তৈরি করেছেন IEM-এরই সিনিয়র শিক্ষার্থীরা।
অনেক নবাগতের কাছে এই অভিজ্ঞতা ছিল চমকপ্রদ। আসানসোল থেকে আসা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা দে তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “আমি আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা-সহ একটি সাধারণ ওরিয়েন্টেশন আশা করেছিলাম। কিন্তু AI রোবট দিয়ে আমাদের স্বাগত জানানো ছিল এক দারুণ চমক! এটি আমাকে একেবারে অন্যরকমভাবে প্রযুক্তি দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় করিয়েছে। একইসঙ্গে নিশ্চিত হতে পেরেছি যে আমি সঠিক জায়গা বেছে নিয়েছি।”
শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারের উদ্দেশে ড. সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “IEM-এ আমাদের লক্ষ্য কেবল শেখানো নয়, বরং ছাত্ররা যাতে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারে, তা দেখা। এই AI রোবট দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঘটনাটা প্রতীকী। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করি।”
অধ্যাপক বনানী চক্রবর্তী নতুন ব্যাচকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেন, “IEM-এ আমরা কেবল শিক্ষাগত কাঠামোই নয়, এমন পরিবেশও শিক্ষার্থীদের প্রদান করি যেখানে তাঁদের সামগ্রিক বিকাশ পরিলক্ষিত হয়।” তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে আরও বলেন, “IEM-এর সঙ্গে পা মিলিয়ে আজ যে যাত্রা আপনারা শুরু করলেন, মনে রাখবেন তা শুধু একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জনের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য।”
কর্পোরেট রিলেশনস-এর ডিরেক্টর গোপা গোস্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যতিক্রমী প্লেসমেন্ট রেকর্ডের উপর জোর দিয়ে বলেন, “ইন্টার্নশিপ, লাইভ প্রজেক্ট এবং শিল্প সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদেরকে কেবল চাকরির জন্য প্রস্তুত করি না, বরং আমরা ভবিষ্যতের জন্য তাদের গড়ে তুলি। তাঁদের নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য প্রস্তুত করে তুলি।”
অনুষ্ঠানের একটি বড় আকর্ষণ ছিল IEM-UEM গ্রুপ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত আন্তঃবিষয়ক গবেষণার প্রদর্শনী। ড. প্রবীর কুমার দাস বলেন, “আজকের দুনিয়ায় বিজ্ঞান ও মানবিকতা আলাদা নয়। সু-সমন্বিত ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য দুই-ই প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদেরকে এমন ভাবে গড়ে তোলা যাতে তারা শুধু কোডার বা ডিজাইনার নন, একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও প্রতিষ্টিত করতে পারেন।”
IEM ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার মান বাড়িয়ে চলেছে। ২০২৫ সালের ব্যাচ এই গতিশীল শিক্ষামূলক পরিবেশে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের অন্যতম ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেব নিজেদেরকে মেলে ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.