স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ থেকে বেঙ্গালুরু। কলকাতার কিশোরীদের ‘চাহিদা’ বাড়ছে দক্ষিণের কর্ণাটকে। সেই সুযোগ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে নারী পাচারচক্র চালাচ্ছে বাংলাদেশের পাচারকারীরা। বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন জায়গায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কিশোরীদের জোর করে নামানো হচ্ছে যৌন ব্যবসায়। শহরের একাধিক জায়গা থেকে নারী পাচারের ঘটনায় বেঙ্গালুরু থেকে উদ্ধার হয়েছে কিশোরী-নাবালিকা। এর পরই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
[শহরে প্রথম ‘মোমো’-র হাতছানি, পুলিশের দ্বারস্থ আতঙ্কিত তরুণী]
একাধিক ঘটনায় দেখা গিয়েছে, শহরের বিশেষ কিছু এলাকার কিশোরীদের ‘টার্গেট’ করছে পাচারকারীরা। বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের তারা ভিনরাজ্যে পাচারের চেষ্টা করছে। সেই কারণে এবার থেকে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের সতর্ক করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। সম্প্রতি উত্তর বন্দর এলাকার জ্যোতিনগর কলোনির এক কিশোরীকে বেঙ্গালুরুতে পাচার করা হয়। তারই জেরে কিছুদিন আগে উত্তর বন্দর থানার ওসি পার্থ মুখোপাধ্যায় জ্যোতিনগর কলোনির বাসিন্দাদের বহিরাগত যুবকদের থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকার বাসিন্দাদের বোঝানো হচ্ছে, অচেনা যুবকরা এলাকার কিশোরী ও তরুণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু এলাকার মায়েরা যেন মেয়েদের তা থেকে বিরত রাখেন। ওই যুবকরা মেয়েদের প্রলোভন দেখাতে পারে। কিন্তু মেয়েরা যেন ওই পাচারকারীদের ফাঁদে পা না দেন। কারণ, চাকরি অথবা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এলাকার মেয়েদের পাচারের চেষ্টা করতে পারে নারী পাচারকারী চক্র।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি আজমের নামে এক যুবক উত্তর বন্দর এলাকার এক কিশোরীকে বিয়ের টোপ দিয়ে বেঙ্গালুরুর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। কিন্তু আজমেরের কোনও মোবাইল নম্বর বা পরিচয়পত্রের সন্ধান মেলেনি। কলকাতায় মোবাইল ব্যবহার করত না সে। তদন্ত শুরু করার পর পুলিশের সন্দেহ, ওই যুবক আসলে বাংলাদেশি। পুলিশের কাছে খবর, বাংলাদেশ থেকে আসা বহু যুবক বেঙ্গালুরুতে এসে ঘাঁটি তৈরি করেছে। সেখানেই দালাল মারফত তৈরি করেছে জাল পরিচয়পত্র। আজমের তাদের একজন হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। তারাই তৈরি করছে নারী পাচারকারী চক্র। সেই চক্রের সদস্যরাই কলকাতা-সহ দেশের বহু জায়গায় ১৪ থেকে ১৮ বছরের কিশোরী ও তরুণীদের টোপ দিয়ে নিয়ে যায় বেঙ্গালুরুতে। সম্প্রতি বেঙ্গালুরু থেকে উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরী উত্তর বন্দর থানার পুলিশ আধিকারিকদের জানিয়েছে, যে ফ্ল্যাটে তাকে তোলা হয়েছিল, সেখানে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের আরও দুই কিশোরীও ছিল। ফলে বাংলাদেশের এই গ্যাং যে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে, সেই বিষয়ে পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত। এদিকে, এর আগেও পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ বেঙ্গালুরু থেকে এক অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করতে গিয়ে একটি বাংলাদেশি পাচারকারী গ্যাংয়ের সন্ধান পায়। ওই পাচারকারীদের মধ্যে দম্পতিও ছিল। তারাও জাল পরিচয়পত্র জোগাড় করেছিল বলে অভিযোগ। আজমেরের মতো নারী পাচারকারীদের ধরার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[২৮ আগস্ট স্থগিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা, আচমকা সিদ্ধান্তে তুঙ্গে বিতর্ক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.