প্রতীকী ছবি
অর্ণব আইচ: ছেলের থেকে মা মাত্র ৬ বছরের বড়। কোনও অঙ্ক, প্রশ্নের ভুল উত্তর নয়। মা ও ছেলের আধার কার্ডে রয়েছে এমনই বিচিত্র তথ্য। আর সেই ভুয়ো আধার কার্ড দেখেই সেনা গোয়েন্দা ও পুলিশ যৌথভাবে হদিশ পেল এক বাংলাদেশির। ওই ব্যক্তিরই আলাদা দুটি আধার কার্ড উদ্ধার হয়েছে। দুটি কার্ডেরই ঠিকানা ও জন্ম তারিখ আলাদা। ওই বাংলাদেশি ইস্টার্ন কম্যান্ডের সেনা সদর ফোর্ট উইলিয়ামের একাধিক গেট থেকে পরপর তিনদিন কেন উঁকি মারছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী, ওই বাংলাদেশি ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতর প্রবেশেরও চেষ্টা করে। সেনা সদর দপ্তরের পাঁচিলের আশপাশেও তাকে একাধিকবার ঘুরতে দেখা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার দাবি, শুধু কৌতূহলের বশেই সে এই কাজ করে। যদিও ওই বাংলাদেশিকে কোনও গুপ্তচরবৃত্তির কাজে লাগানো হয়েছে, এমন সম্ভাবনাও সেনা গোয়েন্দা ও পুলিশ আধিকারিকরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ধৃত বাংলাদেশির মোবাইল পরীক্ষা করে দেখার চেষ্টা হচ্ছে, সে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।
ধৃত ওই বাংলাদেশির নাম আজিম শেখ। তার আসল বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার নরালি এলাকার কালিয়া গ্রামে। বছর দুয়েক আগে সে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সীমান্ত পার হয়। দালালের হাত ধরে প্রথমে বনগাঁয় আসে। সেখানে কিছুদিন থাকার পর তাকে দালালরাই কলকাতায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এক দালালের পরিচিত গার্ডেনরিচের এক বাসিন্দার সঙ্গে তার দেখা হয়। গার্ডেনরিচ এলাকার একটি প্রায় পরিত্যক্ত আবাসনে একটি ঘরে আজিমের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। আজিমের দাবি, মূলত শ্রমিকেরই কাজ করত সে। সে আসার পর তার মাকেও খুলনা থেকে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসে সে।
দালালচক্রের মাধ্যমেই আজিম প্রথমে নিজের ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে। ক্রমে তার মায়ের জন্যও আরও একটি ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে সে। একই সঙ্গে দালাল মারফত আজিম শেখ তার নিজের নামে আরও একটি ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে। গত কয়েকদিন ধরে তাকে সেনা শিবির এলাকা, তথা ফোর্ট উইলিয়ামের কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। সে বিভিন্ন অছিলায় ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতর প্রবেশেরও চেষ্টা করে। সেনাবাহিনীর নিজস্ব সিসিটিভি ফুটেজে তার সন্দেহজনক চলাফেরা ধরা পড়ে। এরপরই সেনা গোয়েন্দারা তার উপর নজরদারি শুরু করেন। তল্লাশি চালানোর পর তার কাছ থেকে দুটি আধার কার্ড উদ্ধার হয়। সেনাদের তরফ থেকে হেস্টিংস থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ও সেনা গোয়েন্দারা যৌথভাবে তল্লাশি চালিয়ে তার মায়ের সন্ধান না পেলেও উদ্ধার হয় মায়ের ভুয়ো আধার কার্ড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.