সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বরানগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে ঝাড়খণ্ড-যোগ! তদন্তকারীদের দাবি তেমনই। এই ঘটনায় ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, জেলের বসেই খুনের অভিযোগে ধৃত বন্ধুদের সঙ্গে সোনার দোকানে ডাকাতির ছক করেছিল বরানগর ৩০এ বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা প্রতারণার দায়ে জেলবন্দি সঞ্জয় মাইতি। মাস কয়েক আগে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে নারকেলডাঙার বাসিন্দা সুরজিৎ সিকদার নামে একজনের মাধ্যমে বরানগর শম্ভুনাথ দাস লেনের সোনাপট্টির ৯ নম্বর দোকান ‘সরস্বতী চেন এন্ড অর্নামেন্টসে’ রেইকি করায়। জানতে পারে, দুপুরে ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী শংকর জানা দোকানে একা থাকেন। তাঁর ছেলে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও বর্তমানে দিল্লিতে। এরপর জেলের বন্ধুদের সহায়তায় বিহার, ঝাড়খণ্ডের তিন দুষ্কৃতী দিয়ে ডাকাতির ছক কষে সঞ্জয়।
সেইমতো শনিবার ভরদুপুরে ১৫ কেজি সোনা, যার বর্তমান বাজার দর ১৭ কোটি টাকা, লুট করে করে শংকরবাবুর পা বেঁধে সোনার দোকানে থাকা ভারী লোহার দন্ড (কাতুরি) দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়। সঞ্জয় ও সুরজিৎকে গ্রেপ্তার করে সোমবার বারাকপুর আদালতে ধৃতদের পেশ করে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের ব্যবসায়ী দীপক দাসকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে গুলি করে খুন করা হয়। খুনের এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল রাকেশ দাস। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বিহারের থেকে। বর্তমানে সে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি।
প্রতারণা মামলায় সঞ্জয় গ্রেপ্তার হওয়ার পর একই জেলে গেলে রাকেশের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। তারপর জেলে বসেই রাকেশ ও তাঁর এক সাগরেদের সঙ্গে নিজের এলাকায় ডাকাতির ছক কষে সঞ্জয়। গ্রেপ্তারির আগে বিহারে গা ঢাকা দেওয়ায় সেখানে ও ঝাড়খণ্ডে রাকেশের নেটওয়ার্ক তৈরি হয়ে ছিল। তাই বিহার, ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের দিয়েই অপারেশন চালানো হবে বলে ঠিক করা হয়। সম্প্রতি জামিন পেয়ে ডাকাতির আগে পরিচিত সুরজিৎকে টিমে নিয়ে রেইকি করায় সঞ্জয়। এরপর বিহার, ঝাড়খণ্ডের তিন দুষ্কৃতীর সঙ্গে নিয়ে গত শনিবার দুপুরে শঙ্করবাবুর দোকানে যান তারা। ক্রেতা সেজে সঞ্জয় প্রথমে দোকানে ঢোকে। তারপর গয়না দেখার অছিলায় ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের সে ‘কোড মেসেজ’ পাঠায়। এরপরই দুঃসাহসিক ডাকাতির পর স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা ঘটে।
সোমবার শম্ভুনাথ দাস লেনের সোনাপট্টির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করেন বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, “প্রত্যেক অভিযুক্তই গ্রেপ্তার হবে। এই এলাকায় প্রচুর স্বর্ণ ব্যবসায়ী আছেন। তাদের সুরক্ষার জন্য পুলিশি টহলদারি বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেছি। পাশাপাশি অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরার বসিয়ে নজরদারি চালানো হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.