রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলা ভাষায় কথা বলায় ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পথে নেমে প্রতিবাদ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাই কোর্টও। তবে এই অভিযোগ বারবার খারিজ করেছে বিজেপি। পালটা অনুপ্রবেশ ইস্যুকে হাতিয়ার করেছে তারা। এবার এই ইস্যুতে মুখ খুলে মমতাকে বিঁধলেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী।
বৃহস্পতিবার জোড়াসাঁকোর হরিয়ানা ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মিঠুন। তিনি বলেন, “এগুলি সব মিথ্যে কথা। আমি নিজে বেঙ্গালুরুতে একটি হোটেল খুলেছি। যেখানে বেশিরভাগ কর্মী বাঙালি পরিযায়ী। সেখানে কোনও বাংলাদেশি নেই। যদি কেউ বাংলাদেশি থাকেন, তবে নিশ্চয়ই তাঁকে বাংলাদেশি বলেই চিহ্নিত করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সবেতেই বিতর্ক তৈরি করতে চান। আদতে ঘটছে না কিছুই। বাংলাভাষীরা যেমন ছিলেন, তেমনই আছেন। আমরা এই মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়ে যাব।”
গত একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ মঞ্চ থেকে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ হলে কমিশন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তার পালটা জবাব দেন তারকা বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এর বাইরে আর কোনও উপায় নেই। তবে নির্বাচন কমিশন নিজের মতো কাজ করবে। কমিশন ঘেরাও হলে ভুয়ো ভোটারদের অবশ্যই বাদ দিতে হবে। তবেই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোট হবে।” পালটা ‘মহাগুরু’কে বার্তা দেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “আগে রাজ্যসভায় পদ পেয়েছিলেন বলে মমতাকে ভালো লাগত? আর এখন মামলা মোকদ্দমা থেকে পিঠ বাঁচাতে এসব মন্তব্য।”
আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে ইতিমধ্যে গত ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে সভা করেছেন মোদি। ওই মঞ্চ থেকে মিঠুন দলীয় কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেন। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতার দুই বিধানসভার বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন ‘মহাগুরু’। ‘ঘরোয়া কোন্দলে’ জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের তাঁর বার্তা, “দলাদলি ছেড়ে কাজে নামুন। ওমুক দাদা , তমুক দাদা চলবে না। আমাদের দাদা নরেন্দ্র মোদি। আমি নিচুস্তর থেকে সভা করব। আপনারা সহযোগিতা করুন। কেউ মারতে আসলে ভয় পাবেন না। প্রতিরোধ করুন। পালটা দিন। বিভেদ ভুলে একসঙ্গে মাঠে নামতে হবে। বুথে বুথে সব মানুষের কাছে যেতে হবে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে বলছি। কোনও পুরনো-নতুন নয়। আমরা সবাই বিজেপি। ছাব্বিশে আমরা সরকার গড়ব।” প্রসঙ্গত, একের পর এক নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। রাজনৈতিক ওয়াকিবহালদের মতে, একে তো ঘরোয়া কোন্দল। আবার তার উপর দক্ষ সংগঠকের অভাবে জরাজীর্ণ বাংলার গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে ঘরোয়া কোন্দল ভুলে সকলকে কাজের বার্তা দিয়ে মিঠুন যেন আরও একবার বোঝালেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সত্যিই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পদ্মশিবিরের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.