Advertisement
Advertisement

Breaking News

Freedom Fighters

অবহেলিত বাঙালি বিপ্লবীদের কাহিনি এবার বইয়ের পাতায়, গবেষণার তথ্যে নয়া গ্রন্থ

প্রকাশিত হল 'হিস্ট্রি দ্যাট ইন্ডিয়া ইগনোরড'।

Book on forgotten freedom fighters of West Bengal
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:September 4, 2025 2:42 pm
  • Updated:September 4, 2025 2:42 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: ইতিহাস বইতে তাঁদের সম্বন্ধে বিশদে লেখা নেই। অথচ দেশের স্বাধীনতায় এঁদের বীর-বিক্রম-সাহসিকতা সর্বাগ্রে। বুধবার প্রকাশিত হল ‘হিস্ট্রি দ্যাট ইন্ডিয়া ইগনোরড।’ এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (ANI)-এর চেয়ারম্যান প্রবীণ লেখক প্রেম প্রকাশের গবেষণামূলক নতুন গ্রন্থ আলো ফেলল সেই সব বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপর, প্রথাগত ইতিহাস বইতে যাদের সম্বন্ধে বড় একটা লেখা নেই। সে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলার জ্ঞানী-গুণী বিদ্বজ্জনরা। শিক্ষামন্ত্রী, নাট্যকার ব্রাত্য বসু, প্রাক্তন সাংসদ, ‘আইকনিক’ সাংবাদিক কুণাল ঘোষ, চলচ্চিত্র পরিচালক-অভিনেতা অরিন্দম শীল। উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, পূর্ব ভারতের হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া।

Advertisement

বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এবই নিয়ে বিশিষ্টদের মতামত, আগ্রহ উস্কে দিল পড়ুয়াদের। সকলেই বললেন, “এবই না পড়লেই নয়।” মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথায়, “এই বইই প্রমাণ, স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের দুই জাতির ভূমিকা সর্বাগ্রে। বাঙালি এবং পাঞ্জাবি।” আলোচনায় আলাদা করে উঠে এসেছে স্বাধীনতা সংগ্রামী উল্লাসকর দত্তর কথা। ব্রাত্যর আক্ষেপ, “উল্লাসকর দত্তকে নিয়ে ততটা গবেষণা হয়নি। তৈরি হয়নি চলচ্চিত্র। নতুন প্রজন্মকে চেনাতে যা একান্ত প্রয়োজন।” কেন এগিয়ে বাঙালি?

এই বইয়ের ছোট্ট একটি অংশ তুলে ধরেছেন ব্রাত্য। দেশ স্বাধীনের সময় ক্লিমেন্ট অ্যাটলি ছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনিই ভারতের স্বাধীনতার তত্ত্বাবধানকারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাস হয়। ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পর  কলকাতায় এসেছিলেন অ্যাটলি। কলকাতা হাই কোর্টের চিফ জাস্টিস সে সময় ফণিভূষণ চক্রবর্তী। অ্যাটলিকে তাঁর জিজ্ঞাসা, “ভারতকে স্বাধীনতা দেওয়ার নেপথ্যে মহাত্মা গান্ধীর ভূমিকা?” উত্তরে অ্যাটলি বলেছিলেন, “ভূমিকা ন্যূনতম।” ব্রাত্যর কথায়, “ইতিহাসের এই দলিলই প্রমাণ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-সহ বারীন ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত, হেমচন্দ্র দাস কানুনগোর মতো বাঙালি বিপ্লবীদের বল-বিক্রমের কারণে প্রমাদ গুনেছিল ইংরেজরা।”

বইয়ের দু’মলাটে যেমন জায়গা দেওয়া গিয়েছে অনেককে। বাদ পড়েছে কয়েকজনের নামও। যাঁর মধ্যে অন্যতম পশ্চিম মেদিনীপুরের রানি শিরোমণি। বাংলার কর্ণগড়ের রানি প্রথম মহিলা যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাইয়ের অনেক আগে। সাংবাদিক কুণাল ঘোষের অনুরোধ, “আগামীর কোনও বইতে অবশ্যই জায়গা দেবেন রানিকে।” লেখক প্রেম প্রকাশ কথা দিয়েছেন, এই তথ্য আগামীর কোনও বইতে তিনি নিশ্চয়ই রাখবেন।

ব্রাত্য বসুর দাবি, “ভারতের ইতিহাস বলতে আমরা যেটুকু পড়ি সেটা উত্তর ভারতের বিপ্লবীদের কথা। বাংলা এমনকী দক্ষিণ ভারতের বিপ্লবীদের সম্বন্ধেও বড় একটা লেখা নেই অন্য কোনও বইয়ে। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের বহু আগে চেন্নাইয়ের ভেলোরে দানা বেঁধেছিল ভেলোর মিউটিনি। এই বই পড়েই জানতে পারবেন পাঠক। টিপু সুলতানের ছেলে সেই বিদ্রোহকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেননি। বই নিয়ে তৈরি হয়েছে মতানৈক্য। তার নেপথ্যে বিনায়ক দামোদর সাভারকর, ইংরেজদের হাতে বন্দি হওয়ার পর বারবার ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন সাভারকর। অবিরাম করুণা আবেদনের কারণে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার পর তিনি কেবল স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিলেন না, বরং তিনি ইংরেজ শাসকদের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিলেন।” ব্রাত্য বসুর কথায়, “এই বইতে সেটা লেখা নেই, সাভারকরের চেয়ে অনেক বড় বীর ছিলেন বারীন ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত। এমনকী চন্দননগরের ইন্দুভূষণ রায়। এঁরা কেউ ক্ষমা চাননি। ইংরেজদের অত্যাচারে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তবু মাথা নত করেননি।”

কুণাল ঘোষের বক্তব্য, বাংলার কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি এমনই চরিত্র। ঝাঁসির রানির লক্ষ্মীবাইয়ের বহু আগে যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে তরোয়াল ধরেছিলেন। কিছু ভারতীয়র বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাঁকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়। ‘হিস্ট্রি দ্যাট ইন্ডিয়া ইগনোরড’-এ তাঁর কথা থাকা উচিত। বুধবারের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক, সভাপতি স্নেহাশিস সুর।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement