গোবিন্দ রায়: নিজের থানা এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরার ‘আবদার’ খারিজ। ‘কালীঘাটের কাকু’র অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়াল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়াল বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চ।
‘কালীঘাটের কাকু’র আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “অন্তর্বর্তী জামিনের পর ৫ মাসে একবারও সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শর্ত শিথিল করে বেহালার বাড়ির বদলে পিএমএলএ আদালত পর্যন্ত বাড়ানো হোক। যেহেতু রাজ্যে একটি পিএমএলএ আদালত, তাই এলাকার অর্থ গোটা রাজ্য।” সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী ‘কালীঘাটের কাকু’র আর্জির বিরোধিতা করে। বলেন, “উনি তো বলেছেন শরীর অসুস্থ।” বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের প্রশ্ন, “বাড়ির বাইরে মুক্ত বাতাস চাইছেন? আপনি তো জেলে নেই।” ‘কালীঘাটের কাকু’র আইনজীবীর আর্জি, অন্তত আত্মীয়দের আসতে দেওয়া হোক। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আত্মীয় যে কেউ হতে পারেন। আপাতত শুধু বাড়ানো হবে অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়ান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন ‘কালীঘাটের কাকু’। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কয়েকশো কোটি টাকা লেনদেন প্রায় সবই জানা ছিল তাঁর। কীভাবে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হবে, অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা কোন কোন জায়গায় পাঠাতে হবে, সেই পরিকল্পনা করতে সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যেতেন। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁরই নির্দেশে কুন্তল, তাপসদের হাত দিয়ে টাকা যেত। এমনকী, সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। ইডির গোয়েন্দাদের মতে, সুজয়কৃষ্ণর যে তিনটি সংস্থার সন্ধান পাওয়া যায়, সেগুলির মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সে কারণে তাকে জেলবন্দি করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এর আগে একাধিকবার বেহালার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র জামিনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একাধিক যুক্তিতে বারবার তা খারিজ হয়েছে। অবশেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা হাই কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। তবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সুজয়কৃষ্ণবাবুকে জামিনের একাধিক শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, এখনই এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। এরপর মার্চে একই কারণে জামিনের মেয়াদ বাড়াতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শারীরিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অনুমোদন দেয় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.