গোবিন্দ রায়: আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৭ শতাংশ সংরক্ষণ নীতি মেনে প্রকাশ করতে হবে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল। নতুন মেধাতালিকা ৬৬টি সম্প্রদায়কে নিয়ে তৈরি করতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “জয়েন্টের ফল না বেরনোর নেপথ্যে কলকাতা হাই কোর্টের এক বিশেষ বেঞ্চের নির্দেশিকা, সেটা তো সবাই জানে। রাজ্য সরকার যে কাজ দ্রুত করতে চায়, কেউ কেউ কোর্টে গিয়ে তা আটকাতে চায়। যারা বলছেন, জয়েন্টের ফল না বেরনোর জন্য রাজ্য সরকার দায়ী, তারা ভুল বলছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা বলছেন।”
চলতি বছর গত ২৭ এপ্রিল রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল। তিনমাস কেটে গেলেও ফলপ্রকাশ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। কেউ কেউ আর অপেক্ষা না করে অন্যত্র ভর্তিও হয়েছেন। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সংরক্ষণ সংক্রান্ত জট কেটে যাওয়ায় ফলপ্রকাশে তৎপর হয় বোর্ড। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ৭ আগস্ট প্রকাশিত হবে। তবে বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি কৌশিক চন্দ জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলপ্রকাশ স্থগিত করে দেন। ওবিসি এ ও বি অনুযায়ী মেধাতালিকা তৈরি করেছে রাজ্য, যা প্রকাশ করা যাবে না বলেই জানান বিচারপতি।
এদিনের শুনানিতে তিনি প্রশ্ন করেন, “শীর্ষ আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানতে চায় রাজ্য কী করছে? শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রভাব কী পড়বে?” রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আজই জয়েন্টের ফলপ্রকাশ করব। ২০২৫-এর ভর্তি পরে হোক অসুবিধা নেই। শীর্ষ আদালতের সে নির্দেশ আছে এক্ষেত্রে।” বিচারপতির প্রশ্ন, “সেক্ষেত্রে ওবিসি এ ও বি কী যুক্ত হবে?” উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী জানান, “হ্যাঁ, হবে। যাদের সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছিল তারা পোর্টালে আবেদন করবেন ফিনান্সিয়াল স্ট্যাটাস জমা দিতে হবে।” বিচারপতি বলেন, “পেন্ডিং অ্যাডমিশনে কীভাবে এই নোটিফিকেশন কাজে লাগাতে পারেন? দুই ক্যটেগরি যুক্ত করলে ফলপ্রকাশ করতে দেব না। কারণ, শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দেননি। পুরনো ভর্তির ক্ষেত্রে ৭% সংরক্ষণ মানতে হবে। আমার নির্দেশ শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়নি সেটা রাজ্য পালন করেনি। সচিবরা তা শুনতে অভ্যস্ত। আদালতের কথা শোনে না।”
রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি আরও বলেন, “আপনারা ১ হাজার ১৫১টি সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। ১ অগাস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত ৯৯৯ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। সব হয়ে গেল? খতিয়ে দেখলেন একজন আবেদন করল আর সাত দিনেই হাতে দিয়ে দিলেন? খুব অ্যাকটিভ তো?” সওয়াল জবাব শোনার পর জয়েন্টের ফলপ্রকাশ করা যাবে না বলেই জানান বিচারপতি। পরে অবশ্য রায়দানে ১৫ দিনের ডেডলাইন বেঁধে দেন বিচারপতি চন্দ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.