Advertisement
Advertisement
21 July

একুশে জুলাই মুছে দিতে চায় কারা? হাই কোর্টের শর্তে সিপিএমকে অতীত মনে করাল তৃণমূল

ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশকে একাধিক শর্ত বেঁধেছে কলকাতা হাই কোর্ট।

Calcutta HC imposed some condition for TMC's 21 July
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 18, 2025 8:46 pm
  • Updated:July 18, 2025 8:46 pm   

গোবিন্দ রায়: ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশকে একাধিক শর্ত বেঁধেছে কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ নিয়ে রাজ্যের শাসক শিবির কিছু বলতে নারাজ। তবে সিপিএমকে অতীতের কথা স্মরণ করালেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

Advertisement

এদিন হাই কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, ২১ জুলাইয়ের সকাল ৮ টা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে মিছিল ধর্মতলায় আসতে পারবে। সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত যাতে কোনো যানজট না হয় এবং কলকাতা হাইকোর্ট থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে যাতে মানুষের অফিস যেতে অসুবিধা না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সকাল ১১ টার পর আবার মানুষ হেঁটে মিছিল করে ঢুকতে পারবে। তবে এদিন আদালতে ২১ জুলাইয়ের পুলিশি অনুমতিপত্র আদালতে পেশ করতে পারেনি রাজ্য। যদিও রাজ্যের মৌখিক দাবি, অনুমতি পেয়েছে তারা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, “যান নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনারকে আরো বেশি যুক্তিসঙ্গত হওয়ার প্রয়োজন ছিল। বেশ কিছু রাস্তার কথা বলা আছে যেগুলো বন্ধ করলে উত্তর কলকাতা বন্ধ হয়ে যাবে।” পালটা রাজ্যের সওয়াল, “যান চলাচল বন্ধের কথা বলা হয়নি, নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।” তা শুনে বিচারপতি বলেন, “হ্যাঁ, গাড়ি গতি কমতে কমতে শূন্য হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “ফুটপাথ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিন। মানুষ যাতে রাস্তায় নামতে না পারেন। কলকাতা পুলিশের দক্ষতা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই, সেই কারণে আমি নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র ছাড়া তদন্তভার কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিই না।” রাজ্যের সওয়াল, “প্রধানমন্ত্রীর সফর, ব্রিগেডের সভাতেও একই ধরনের বিধিনিষেধ পুলিশ আরোপ করে।”

শহরের যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রশংসা করে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, “আমাদের ট্রাফিকের অবস্থা মুম্বই, বেঙ্গালুরুর থেকে অনেক ভালো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আদালতকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য প্রশাসন শাসকদলের নির্দেশে রাস্তা আটকে মানুষের অসুবিধা তৈরি করছে।” এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন মামলাকারীর আইনজীবী। তিনি বলেন, “২ মাস আগে মাত্র ২০০ জন লোককে নিয়ে কর্মসূচির অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি পুলিশ দেয়নি যানজট এবং মানুষের অসুবিধার যুক্তি দেখিয়ে।” সওয়াল জবাব শেষের পর একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ নিয়ে একাধিক শর্তের কথা বলে আদালত।

এরপর সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল ঘোষ বলেন, “২১ জুলাই অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় না। বাংলার বুকে সবচেয়ে বড় পরিকল্পিত গণহত্যা হল একুশে জুলাই। পুলিশ বেছে বেছে গুলি করে নিরস্ত্র রাজনৈতিক কর্মীদের মেরেছিল। তাঁদের শহিদ তর্পণের সঙ্গে অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি মেলে না। এটা শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এটা একটা আবেগ, চোখের জল, বুকের আগুন। এটা ইতিহাসের পাতা সামনে রেখে একটা পুষ্পস্তবক দেওয়ার দিন। ফলে মহামান্য আদালতের যদি মনে হয় রাস্তাঘাট, শুধু কোর্টের দিকে যাওয়ার জন্য খোলা হতে পারে। কার কী মনে হয়। অন্যান্য দল যখন মিছিল, মিটিং করছে। কর্মসূচি যখন হচ্ছে। নবান্ন অভিযান ডাকছে। সেগুলো কোর্ট দেখতে পাচ্ছে না? বেছে বেছে শুধু ২১ জুলাই।” এরপর সিপিএমকে বিঁধে কুণাল আরও বলেন, “২১ জুলাই বেছে বেছে মুছে দিতে চায় কারা? সিপিএম। তাদের পাপ, তাদের সন্ত্রাস।” তাঁর মতে, “কোর্ট যা বলছে নিশ্চয়ই প্রশাসন, দল, সরকার দেখবে। আমাদের বক্তব্য, শহিদ তর্পণ, আবেগ, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেওয়ার দিন।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ