সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও পুরুলিয়ার মতো ক’টি জেলা ছাড়া গোটা রাজ্যের বিএলএ ১-এর তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। তবে বিএলএ ২-র সিংহভাগ তালিকা এখনও প্রদেশ নেতৃত্বের হাতেই আসেনি। ১ নভেম্বর নাগাদ বাংলায় এসআইআরের ঘোষণা হতে পারে ধরে নিয়ে ২০ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৯৫ হাজার বিএলএ ২-এর তালিকা জমা দিতে বলল এআইসিসি নেতৃত্ব। বুধবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে বিএলএ ১-এর ওয়ার্কশপে দলের পর্যবেক্ষক গোলাম মিরের এই নির্দেশ ঘিরে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে এত কম সময় এই সংখ্যক বিএলএ ২ বাছাই করা কীভাবে সম্ভব!
দলের একটা বড় অংশের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর ২০১৬ থেকে দল দফায় দফায় সিপিএমের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়েছে। দল স্বনির্ভর তো হয়নি, উলটে দলের কোমরই ভেঙে গিয়েছে। বুথে যেখানে কর্মী মেলাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে আর ১২ দিনের মধ্যে বিএলএ ২ অর্থাৎ বুথ লেভেল এজেন্টের তালিকা দেওয়া কীভাবে সম্ভব! সভায় এদিন সেই প্রশ্ন উঠতে মির বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়েও টার্গেট বেঁধে দিয়ে বলেছেন, “বাস্তবটা মেনে নিয়েই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। সব না হোক, চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব বুথ এজেন্ট দেওয়া যায়। তার জন্যই নির্দিষ্ট দিনের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।” এসআইআর নিয়ে এদিন বক্তৃতা দেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর বসু, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ বসু প্রমুখ।
জেলা সভাপতিরা ছাড়াও প্রতিটি বিধানসভাতেই নিযুক্ত বিএলএ ১ এদিন সভায় ছিলেন। প্রত্যেক বিধানসভা ধরে বিএলএ ১ ওই বিধানসভার প্রতি বুথে বিএলএ ২ নিয়োগ করবেন। দুটিই দলের পদ। দলের তরফে এই বিএলএ ২-ই সরকারি প্রতিনিধি ব্লক লেভেল অফিসার বা বিএলও-দের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা যাচাই করবেন। এদিন এআইসিসির কথা শোনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন এত কম সময়ে বিএলএ ২-র তালিকা দেওয়ার নির্দেশ নিয়ে। একাধিক জেলা সভাপতির বক্তব্য, এই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে বারবার জোট ছেড়ে একা লড়াইয়ের দাবি করা হয়। কিন্তু কোনওবারই দলের নিচুতলার কথা শোনা হয়নি। তাহলে বুথ লেভেল এজেন্ট খোঁজার জন্য এভাবে হন্যে হয়ে ঘুরতে হত না।
এদিনের ওয়ার্কশপে অন্য একটি বিষয় মিরের নজরের পড়েছে। সকাল ১১টা থেকে মাঝে একবার লাঞ্চ ব্রেক দিয়ে বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টে পর্যন্ত এদিন সভা চলেছে। তাতে একবারের কংগ্রেসের সভার চেনা ছবি ছিল না। একবারের জন্যও কাউকে কোনও বিশৃঙ্খলা করতে দেখা যায়নি বলে প্রশংসাই করেছেন মির। সূত্রের দাবি, মির প্রকারান্তরে বুঝিয়েছেন, সংগঠন নিয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের এই সিরিয়াসনেস এআইসিসির নজর কেড়েছে। বেশ কিছু জেলায় ‘ভোট চোর-গদি ছোড়’ স্লোগানকে সামনে রেখে সই সংগ্রহ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন মির। এদিন উত্তর কলকাতায় জেলা কংগ্রেস সভাপতি তারক পালের উদ্যোগে তেমনই একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন মির ও শুভঙ্কর। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর হামলার ঘটনার সময় আশপাশে এই স্লোগানও শোনা গিয়েছিল বলে একটি সূত্রের দাবি। বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ যে এই স্লোগানকে আপন করে নিয়েছে সেই রিপোর্টও দিল্লিকে দিয়েছে প্রদেশ নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.