Advertisement
Advertisement
Debanjan Deb

সিটি কলেজে ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্পের মামলায় ফের পুলিশ হেফাজতে দেবাঞ্জন দেব

দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও।

Debanjan Deb return to police custody in case of fake vaccination camp at City College, Amherst Street | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:July 9, 2021 8:03 pm
  • Updated:July 9, 2021 8:36 pm  

অর্ণব আইচ: ফের পুলিশ হেফাজতে ভুয়ো আমলা দেবাঞ্জন দেব (Debanjan Deb)। জেল হেফাজতে যাওয়ার দু’দিনের মধ্যে ফের দেবাঞ্জন দেবকে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার একটি মামলায় পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। একই সঙ্গে পুলিশ হেফাজতে দেবাঞ্জনের আট সঙ্গীও। গত বুধবারই দেবাঞ্জনকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আলিপুর আদালত। তার আগে গত সোমবার দেবাঞ্জনের সাত সঙ্গীকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলের মধ্যেই যাতে দেবাঞ্জনকে জেরা করা হয়, সেই আবেদনও আদালত মঞ্জুর করে। আমহার্স্ট স্ট্রিটে সিটি কলেজে ভুয়ো টিকাকরণের ক্যাম্পের আয়োজন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল দেবাঞ্জনের কসবার ভুয়ো পুরসভা অফিসের কর্মচারী ইন্দ্রজিৎ সাউকে। শুক্রবার তাকে ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। ওই একই মামলায় অভিযুক্ত ছিল দেবাঞ্জন দেব ও তার সঙ্গীরাও। তাই এদিন জেল থেকে দেবাঞ্জন ও তার সঙ্গীদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলে লালবাজারের ‘সিট’। এদিকে, দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তার বিরুদ্ধে টাকা তছরূপের অভিযোগ এনে ইডি শুরু করছে তদন্ত। তার জন্য আদালত থেকে দেবাঞ্জনের মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র জোগাড় করছে ইডি।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী তাঁর আবেদনে জানান, দিনের পর দিন গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে দেবাঞ্জন দেব। নিজেকে আইএএস বলে পরিচয় দিয়েছে। কলকাতার একাধিক জায়গায় ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্প করেছে। যদি এই ইঞ্জেকশন নিয়ে কারও বড় ধরনের শারীরিক ক্ষতি হত, তখন দেবাঞ্জন কী করত? আদালতে বিচারক জানান, তাঁরাও অনেকে লালবাতি বা নীলবাতি ব্যবহার করেন না। সেখানে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন এটি ব্যবহার করে কীভাবে? দেবাঞ্জন দেবের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য আবেদনে জানান, কেউ নীলবাতি বা লালবাতি ব্যবহার করছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। তা নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মাবলীও রয়েছে। দেবাঞ্জনের পুলিশ হেফাজতের আবেদনের বিরোধিতা করে তার আইনজীবী জানান, ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন তাকে পুলিশ জেরা করেছে। যে ক্যাম্পগুলি সে আয়োজন করেছিল, তাতে কেউ অসুস্থ হননি। যাঁরা তাকে ওষুধ সরবরাহ করেছে, তারাই জানে কী ওষুধ ছিল। তাদের আড়াল করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক দেবাঞ্জন দেবকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তার আট সঙ্গী সুশান্ত দাস, শান্তনু মান্না, রবিন শিকদার, খুড়তুতো দাদা কাঞ্চন দেব, কম্পাউন্ডার শরৎ পাত্র, নিরাপত্তারক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য, বাড়িওয়ালা অশোক রায় ও কর্মচারী ইন্দ্রজিৎ সাউকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। সেই অনুযায়ী এদিন ন’জনকেই লালবাজারে নিয়ে এসে ফের জেরা শুরু করে ‘সিট’। কসবার মতোই আমহার্স্ট স্ট্রিটের এই মামলায় খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করা যায় কি না, পুলিশ তা নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনাও করছে।

[আরও পড়ুন: খোলামুখ খনির মরণফাঁদে আসানসোলের নিখোঁজ ছাত্রী, দেহ উদ্ধার ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য]

গত ১৮ জুন উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের সিটি কলেজে ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্পের আয়োজন করে দেবাঞ্জন দেব। পুলিশ জানিয়েছে, কসবার অফিসের কর্মচারী ইন্দ্রজিৎ সাউয়ের সঙ্গে কলেজের ইউনিয়নের সদস্যদের পরিচয় ছিল। তাঁদের মাধ্যমেই দেবাঞ্জন নিজেকে কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার বলে পরিচয় দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই ক্যাম্পে ৭২ জন শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রী টিকা নিয়েছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককেই ভুয়ো টিকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁরা শংসাপত্র চাইলে বলা হয়েছিল, পরে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পুলিশের অভিযোগ, ভুয়া টিকাকরণ ক্যাম্পের আয়োজনে সাহায্য করেছিল তার ছায়াসঙ্গী শান্তনু মান্না। সেখানে উপস্থিত ছিল তার নিরাপত্তারক্ষী। একই সঙ্গে দেবাঞ্জন যে বিপুল পরিমাণ টাকা জালিয়াতি করেছিল, সেই টাকার হদিশও পুলিশ জানতে চাইছে। সেই কারণে তার বাড়িওয়ালা অশোক রায় ও অন্য কয়েকজনকেও পুলিশ জেরা শুরু করেছে। এই চক্রে আরও কতজন জড়িত, তাও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement