সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখেছিলেন, ‘ভিখারি-মায়ের শিশু, কলকাতার যিশু’। কলকাতা ও শহরতলির রাস্তায় আজও ‘যিশু’রা পথেঘাটে ধুলোয় বেড়ে ওঠে। যাদের কাছে দু’বেলার পেটভরা খাবারও অলীক স্বপ্নের মতো। সেখানে পড়াশোনা যেন বিলাসিতা মাত্র। সেই পথশিশু ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে তৎপর ‘নীব’। সন্ধ্যাকালীন এই বিদ্যালয়ে পাঠ নেয় অনেকে। মহালয়ার প্রাক্কালে তাদের নিয়েই বিশেষ দুর্গোৎসব উদযাপন করল কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য, এই শিশুদের মধ্যে নাগরিক চেতনা ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা।
আকাশের মুখ ভার হলেও বাতাসে পুজোর গন্ধ। রাত পোহালেই মহালয়া। দেবীপক্ষের সূচনার পর মাতৃ আরাধনায় মেতে উঠবে বঙ্গবাসী। লক্ষ লক্ষের ভিড় উপচে পড়বে শহরে অলিগলিতে। সেই জনতার জঙ্গলে কার্যত হারিয়ে যাবে কলকাতার যিশুরা। তাদের কথা ভাবার মতো ‘ফুরসত’ কোথায় সাধারণের কাছে। হাওড়ার ‘শ্রী জৈন বিদ্যালয়ে’র সহযোগিতায় কলকাতার বুকে বিশেষ দুর্গোৎসব উদযাপনের আয়োজন করে ‘নীব’। অবহেলিতদের দেওয়া হয় সামাজিক মূল্যবোধের পাঠ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিচারপতি সৌমিত্র পাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী ও শ্রী জৈন বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুধীরকুমার মেহতা (এলএলএম)।
সুধীরকুমার মেহতা বলেন, “দারিদ্র দূরীকরণ বা পিছিয়ে পড়া সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব শুধুমাত্র সরকারের নয়। সমাজেরও বটে। যদি আরও কিছু সংগঠন ‘নীব’-এর মতো উদ্যোগ নেয় তবে খুব অল্প সময়েই সমাজ সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে।” অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘ছত্রছায়া’ দল। সেখানে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থেকে এই শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কবি নীরেন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘এখন রোদ্দুর ফের অতিদীর্ঘ বল্লমের মতো মেঘের হৃৎপিণ্ড ফুঁড়ে নেমে আসছে; মায়াবী আলোয় ভাসছে কলকাতা শহর।’ সংগঠকদের আশা সবাই এগিয়ে আসলে দেবী দুর্গার ‘মায়াবী আলোয়’ ঘুচে যাবে পথশিশুদের জীবনের অন্ধকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.