স্টাফ রিপোর্টার: পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের কট্টর বিরোধিতায় সরব বিজেপি। অথচ বিধানসভা ভোট বৈতরণী পেরতে এবার সেই বিজেপিরই দ্বিচারিতা রীতিমতো বেআব্রু। জেলায় জেলায় পুজো কমিটিগুলিকে এবার অর্থ সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। আর সেই টাকা বণ্টনের দায়িত্ব দেওয়া হল অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, পাঁচ বছর আগের এই খাতে দিল্লি থেকে পাঠানো কোটি কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলের নির্দেশে এবার মিঠুনকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে দলের উপরতলায় ছড়ি ঘোরানো জনা দুই প্রভাবশালী পদাধিকারী রীতিমতো মনোকষ্ট পেয়েছেন বলে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলের খবর।
প্রশ্ন উঠছে, পুজো আয়োজকদের রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করে তা আটকাতে এমনকী আদালতে বেনামে মামলা পর্যন্ত করেছে বিজেপি। কিন্তু তথ্য বলছে, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগের পুজোয় ক্লাব বা পুজো কমিটিগুলোকে টাকা দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেই টাকা জেলায় পৌঁছনোর আগেই হাওয়া হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ ক্লাবই টাকা পায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে একাধিক স্থানে বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় রাজ্য বিজেপি নেতাদের। এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় টাকা পাওয়া বহু ক্লাবের অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায়নি। দলীয় সূত্রে খবর, সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই এবার মিঠুনকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত বনশলের। অর্থ তছরুপ ঠেকাতে ঠিক হয়েছে, কোনও জেলার নেতাকে টাকা পাঠানো হবে না। ক্লাবের প্রতিনিধিদের নিজেদের এসে টাকা নিয়ে যেতে হবে।
এসবের মধ্যেই ভোটের আগে ২০২০-র ধাঁচে এবছর ফের ইজেডসিসি-তে ধুমধাম করে দুর্গাপুজোর আয়োজনে মাতামাতি শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। বাংলা ও বাঙালি নির্যাতনের ঘটনায় গায়ে লাগা ‘বাংলা বিদ্বেষ’-এর তকমা কাটাতেই এই চেষ্টা বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ২০২০-তে পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত দিয়ে। এই পুজো উদ্বোধন করার কথা অমিত শাহর। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যর দাবি, বিজেপি কোনও দুর্গাপুজো করছে না। পুজো করছে ‘পশ্চিমবঙ্গ সাংস্কৃতিক মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন। যার সঙ্গে দলের কিছু সদস্য-সমর্থক যুক্ত আছেন মাত্র।” নানাবিধ ‘এলাহি আয়োজনের’ ব্যবস্থাবহুল এই পুজোর বাজেট ৩০ লাখের নিচেই থাকবে বলে দাবি মূল উদ্যোক্তা দলের সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষের। তাঁর দাবি, দল থেকে একটা টাকাও পুজোর জন্য দেওয় হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রথমবারের দূর্গাপুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেত্রী সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরির কটাক্ষ, “ঠিক ভোটের সময়ই বিজেপি দুর্গাপুজো নিয়ে মাতামাতি করে কেন? মাঝের অন্য বছরগুলোয় হেলদোল থাকে না কেন? এটাই তো আমাদের কাছে রহস্য!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.