Advertisement
Advertisement
Organ Donation

মৃত্যুর পরেও ‘জীবিত,’ অঙ্গদানে প্রাণ বাঁচিয়ে ইতিহাস রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তার

রাজ্যের ‘প্রবীণতম’ অঙ্গদাতা হিসেবেও নজির প্রাক্তন এই স্বাস্থ্য অধিকর্তার।

Family of Former Bengal Health Director Late Sanchita Bakshi Creates History by Donating Organs After Brain Death
Published by: Ramen Das
  • Posted:September 16, 2025 2:37 pm
  • Updated:September 16, 2025 3:55 pm   

রমেন দাস: পেশায় ছিলেন চিকিৎসক, দায়িত্ব সামলেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা হিসেবেও। এবার মৃত্যুর পরেও ইতিহাস গড়লেন তিনিই। ৭৬ বছর বয়সের সঞ্চিতা বকসীর অঙ্গদানে প্রাণ বাঁচল দু’জনের। শুধু তাই নয়, নিউটাউনের বাসিন্দার কর্নিয়াও সংরক্ষিত হল তাঁর পরিবারের অনুমতিতে। কীভাবে সৃষ্টি হল এই ইতিহাস?

Advertisement

চিকিৎসক সঞ্চিতা বকসী (Sanchita Bakshi), নিউটাউনে থাকতেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, দুই মেয়ের মা গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তড়িঘড়ি নেওয়া হয় বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু পরের দিন অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি নয়। হাসপাতালেই ‘ব্রেন ডেথ’ (Brain Death) হয় ১১ সেপ্টেম্বর! এরপর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বেনজির সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এক কন্যা কানাডায় থাকেন, ফেরেন তিনিও। আর এক কন্যা পেশায় চিকিৎসা ক্ষেত্রেই রয়েছেন। তিনি এবং তাঁর বোন মিলে সিদ্ধান্ত নেন, মায়ের অঙ্গদানের! শুরু হয় সামগ্রিক পদ্ধতি। ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর পরেও ‘জীবিত’ যেন সঞ্চিতা!

ওই প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তার লিভার প্রতিস্থাপিত হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM Hospital) ৪৮ বছরের এক পুরুষের শরীরে। প্রয়াত সঞ্চিতা বকসীর কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে ৪৯ বছরের এক মহিলার শরীরে, বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াতে মূলত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ‘ROTTO’, যাঁদের আধিকারিকদের সহযোগিতায় মিলেছে সমাধান!

জানা গিয়েছে, এই অঙ্গদান ইতিহাস সৃষ্টি করেছে দু’দিক থেকে। এক, রাজ্যের প্রবীণতম কেউ অঙ্গদান করলেন। দুই, স্বাস্থ্য দপ্তরের কোনও উচ্চপদস্থ অধিকর্তার পরিবার আগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, স্পষ্ট নয়।

কিন্তু কেন এই সাহসী সিদ্ধান্ত? শোকগ্রস্ত কন্যা অনিন্দিতা বকসী বলছেন, ‘মা সব সময় অঙ্গদানের উদ্যোগকে সমর্থন করতেন। চাইতেন এইভাবে মানুষের উপকার হোক। তাঁর ইচ্ছাপূরণের চেষ্টা করেছি। ভেবেছি, যদি মায়ের অঙ্গে কয়েক জনের প্রাণ বাঁচে, সেটাও তো খানিকটা স্বস্তি। এই কারণেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’ তাঁর কথায়, ‘৯ সেপ্টেম্বর মা আচমকা অসুস্থ হন। তারপর তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হয়। ব্রেন ডেথ হয় মায়ের! আমরা দুই বোন, আমার ছোট বোন কানাডা থাকে, ওর ফেরার অপেক্ষা করছিলাম। তারপর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ অনিন্দিতা বলছেন, ‘মাকে হারিয়েছি। বাবাও অসুস্থ। মাকে আর কোনও দিন ফিরে পাব না। কিন্তু তাঁর অঙ্গদানে যদি একটুও ভালো হয়, তাহলে করব না কেন!’ উল্লেখ্য, রাজ্যে চলতি বছরে সঞ্চিতা বকসীর অঙ্গদান ১৪তম।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ