Advertisement
Advertisement
Fraud

মাসে মাত্র ১ শতাংশ সুদে বিপুল লোনের ফাঁদ! চিনা অ্যাপেই লুকিয়ে সর্বনাশ

আমজনতাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ পুলিশের।

Financial Fraud in the name of Loan, investigation underway
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 7, 2025 2:32 pm
  • Updated:April 7, 2025 3:04 pm   

অর্ণব আইচ: সুদ মাসে মাত্র এক শতাংশ। এখনই আপনি পেতে পারেন সাড়ে ৬ লাখ টাকা! মোবাইলে লিঙ্ক পেয়ে ফাঁদে পা দিলেই বাড়ছে বিপদ। বিদেশি লোন অ্যাপকে নকল করে টাকা হস্তগত করার ছক কষা হচ্ছে চিনা সংস্থা, এমনই অভিযোগ। কলকাতা-সহ রাজ্যের বহু মানুষের মোবাইলে এই ধরনের মেসেজ আসছে, এমনই খবর কলকাতা ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছে। এই ব্যাপারে পুলিশের পক্ষে কলকাতা-সহ রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্কও করা হচ্ছে।

Advertisement

সূত্রের খবর অনুযায়ী, ঋণ দিতে চেয়ে অনেকের কাছেই যাচ্ছে মেসেজ। কাউকে সাড়ে ৬ লাখ টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে। আবার কাউকে বলা হচ্ছে আরও বেশি টাকার কথা। বলা হচ্ছে, মাসে এক শতাংশ হারে সুদে ফেরত দেওয়া যাবে ওই টাকা। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, কেউ ওই ফাঁদে পা দিয়ে রাজি হলে তাঁকে যে একসঙ্গে ওই বিপুল টাকা দেওয়া হবে, তা নয়। প্রথম দফায় ওই টাকার কিছু অংশ পেতে পারেন আবেদনকারী। এর আগেও দেখা গিয়েছে যে, ঋণ দেওয়ার আগে এমনভাবেই বলা হয় যে, যাঁকে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, তিনি সহজেই ঋণ পেতে পারেন। তাঁকে শুধু পাঠানো লিংকে ক্লিক করে অ্যাপে ঢুকতে হবে।

যদিও ঋণ দেওয়া যতটা সহজ বলা হয়, ততটা নয়। কারণ, যে ব্যক্তি ঋণ নেবেন, তাঁকে কয়েকটি তথ্য দিতে হয়। আবার সহজে ঋণের টাকা পাওয়ার লোভে তাঁরা তথ্যও দিয়ে দেন। ওই তথ্যগুলি বেশিরভাগই ব্যক্তিগত। তার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর অনেক তথ্যই চেয়ে নেওয়া হয়। আবেদনকারী তথ্য দেওয়ার পর রাজি হয়ে ক্লিক করলেই তাঁর অ্যাকাউন্টে কিছু পরিমাণ টাকা পাঠানো হয়। আবেদনকারী টাকা তুলে খরচ করতেই পারেন। কিন্তু এক মাস পার হওয়ার আগেই পুরো টাকার জন্যই এক শতাংশ সুদ চাওয়া হয়, এমনও দেখা গিয়েছে।

অর্থাৎ, সাড়ে ৬ লাখ টাকার টোপ দেওয়া হলে তাঁকে তার উপর মাসে এক শতাংশ সুদের টাকা দিতে বলা হয়। অনেকের পক্ষেই প্রত্যেক মাসে এই বিপুল টাকার সুদ দেওয়া সম্ভব হয় না। আর তার পরই তাঁকে ফোন করে শুরু হয় ব্ল‍্যাকমেলিং। এর পর ওই ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন কুৎসা তৈরি করেও ব্ল‍্যাকমেল করা হয়। অনেকেই বাধ্য হয়ে টাকা দিতে শুরু করেন। আর প্রত্যেক মাসে টাকা না দিলেই ব্ল‍্যাকমেলিং চলতে থাকে। গোয়েন্দারা জেনেছেন, এর পিছনে রয়েছে চিনা অ্যাপ। চিনের বেশ কিছু জালিয়াত ওই জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত। এর আগে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও এই জালিয়াতদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। তাদের ‘মিউল অ্যাকাউন্টে’ টাকা রাখা হলেও চক্রের আসল মাথারা চিনেরই।

যদিও গোয়েন্দারা জেনেছেন, চিনের বদলে নেপালের বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া কলসেন্টার তৈরি করা হয়। নেপালিরা অনেকেই যেহেতু হিন্দিতে স্বচ্ছন্দ্য, তাই তাদের কলারের চাকরি দেয় চিনের ওই জালিয়াতরা। ওই নেপালের বাসিন্দাদের দিয়ে ব্ল‍্যাকমেলিং তথা হুমকির ফোন করানো হয়। গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, টানা ধরপাকড়ের ফলে এই জালিয়াতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু তাঁদের মতে, এবার ফের নতুনভাবে অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে টাকা হাতানোর ছক কষছে চিনের জালিয়াতরা। তার জন্য তারা পরিচিত অন্য অ্যাপের নামের সামান্য বিকৃতি ঘটিয়ে মেসেজ পাঠিয়ে টাকা হাতানোর ছক কষছে। চিনা খঋণ অ্যাপের ফাঁদে যাতে কেউ পা না দেন, তার জন্য কলকাতা-সহ রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ