স্টাফ রিপোর্টার: খিদিরপুরে ২০বি কার্ল মার্কস সরণির ভদ্রাসন বন্ধু কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হরিমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রি করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ইতিহাস খুঁড়তে নেমে এই তথ্য কলকাতা পুরসভার হাতে এসেছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বুধবার রাজ্য সরকার ও পুরসভার অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, “মধুসূদন দত্তর বাড়ি হস্তান্তর হচ্ছিল। আমরা পুরসভা থেকে আটকে দিয়েছি। প্রোমোটিং করতে দিচ্ছি না। শেষ পর্যন্ত একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ফান্ড জোগাড় করতে হবে। যাতে বাড়িটি পুনরুদ্ধার করা যায়।”
পুর-সূত্রের খবর, কার্ল মার্কস সরণির ওই বাড়িতে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও প্ল্যান স্যাংশনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। হেরিটেজ কমিটির ‘গ্রেড ২এ’ তালিকাভুক্ত ইমারতটি রক্ষা করতে পুরসভা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। অন্যদিকে পুরসভার হেরিটেজ কমিটিও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। কবি তাঁর পৈত্রিক ভিটা যে বিক্রি করে দিয়েছিলেন, সে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে কমিটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প-এর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
হেরিটেজ কমিটির এক কর্তার কথায়, “পৈত্রিক বাড়ি বিক্রির নথি জোগাড় মানেই অর্ধেক যুদ্ধজয়। সেই নথিই বলে দেবে, ২০বি কার্ল মার্কস সরণির বাড়িটা আসলে মধুসূদন দত্তর।” এ ব্যাপারে সাহিত্য পরিষদ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেছে কলকাতা পুরসভা। তাতে মিলেছে উল্লেখযোগ্য তথ্য। পরিষদের পত্রিকার ২০০৬ সালের মার্চ সংখ্যায় লেখা হয়েছে, ‘২০ নং কার্ল মার্কস সরণি (পূবর্তন গার্ডেনরিচ রোড) খিদিরপুর-স্থিত বাড়িটি রামনারায়ণ বসু হস্তান্তরিত করেন রাজনারায়ণ দত্তকে। রাজনারায়ণ ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পূত্র মধূসূদনকে নিয়ে আসেন ওই বাড়িতে। মধূসূদন ২০ নং সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের বাড়িতে বসবাস করেছেন বহুকাল।’ নিবন্ধে আরও জানানো হয়েছে, ‘ওইখান থেকে তিনি হিন্দু কলেজে যাতায়াত করতেন। পরে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে পিতৃগৃহ ত্যাগ।’ বিদেশ যাওয়ার সময় বাড়িটি তিনি বেচে দেন।
পাশাপাশি কলকাতা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। ২০বি কার্ল মার্কস সরণির বাড়ি ছাড়াও কবি বিভিন্ন সময়ে একাধিক বাড়িতে বসবাস করেছেন। মেয়রের বক্তব্যে ইঙ্গিত, সেই সব তথ্যও রাজ্য হেরিটেজ কমিশন জোগাড় করেছে। মেয়র বলেন, “মধুসূদন দত্ত কোন বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থেকেছেন, তা চিহ্নিত করে দিতে হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.