স্টাফ রিপোর্টার: ২৫০ ছুঁইছুঁই মুরগি (Chicken)। আর পাঁঠার মাংস আটশোর দোরগোড়ায়। দোলে বাজারে আগুনে দাম মাংসের। তবুও শনিবার সকালেই একাধিক বাজারে দোকানের সামনে লম্বা লাইন। রবিবারও একই ছবি। আগামী দু’দিন এই দাম আরও বাড়তে পারে বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারভেদে মুরগি বিকোচ্ছে ২৩০-২৪০ টাকা কেজিতে। আর পাঁঠার মাংস (Mutton) ৭৬০-৭৮০ টাকা। তবে দাম হলেও ভিড় পাতলা নয় কোনও দোকানেই। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দামও। কাতলা, পাবদা, ভেটকি, সবেরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে অবশ্য তোপসের চাহিদাও মন্দ নয়। অনেকেই বলছেন, দোলের দিন সন্ধের জলখাবারে যদি তোপসে ফ্রাই থাকে তবে রং খেলার টেস্টটা আরও বেড়ে যায়।
বেশ কয়েকমাস ১৮০-২০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে মুরগির মাংস। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে মাংসের দামের ঊর্ধ্বগতি চোখে পড়েছে। যা নিয়ে চিন্তায় আম-গেরস্ত। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই সময় মানে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে মুরগির উপর ভাইরাসের আক্রমণ হয়। ফলে ৩০-৪০ শতাংশ মুরগি মারা যায়। তারই প্রভাব পড়ে বাজারে। দাম বাড়ে এই সময়। তাছাড়া বিয়ের মরশুম তো রয়েছে। আর এখন দোল-হোলি। সেই হিসাবে দামটা একটু চড়াই থাকবে কিছুদিন। আর দোলের আগেই শুক্র, শনিবার থেকে মানুষ মাংস নিয়ে যাচ্ছে, ভিড় এড়ানোর জন্য। তাই রংয়ের উৎসবের কিছুদিন আগে থেকেই দামটা বেড়ে গিয়েছে।
দাম বেড়েছে খাসির মাংসেরও। রবিবার করে এমনিতেই মাংসের দাম অন্য দিনের তুলনায় ১০-২০ টাকা বাড়ে। দোলের আগের দিন বলে তার দাম আরও কিছুটা চড়া। আজ কোনও কোনও বাজারে ৮০০ ছুঁলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি দামে হঠাৎ করেই পরিবর্তন ঘটেছে। যে কারণে তাঁরাও দামে পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। পোলট্রি সংগঠনের নেতারা বলছেন, দামবৃদ্ধির পিছনে রয়েছে মুরগির খাবারের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি। খামারে খাবার হিসাবে ভুট্টার দানা ব্যবহার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সেই খাবারের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেতেই যাবতীয় হিসাব বদলে গিয়েছে। আর তার উপর রয়েছে এই ভাইরাসের হানা। ফলে জোগানেও ঘাটতি রয়েছে।
দক্ষিণে গড়িয়াহাট থেকে মুকুন্দপুর বাজার, উত্তরে বরানগর হোক বা মানিকতলা বাজার, সর্বত্র চড়া দাম মাংসের। তবে ক্রেতাদের শনিবার অবশ্য দাম নিয়ে মাথাব্যথা করতে দেখা যায়নি। প্রত্যেকেরই বক্তব্য, দোলের আগে দাম তো একটু বাড়বে। চিকেন পকোড়া, চিকেন কষা, চিলি চিকেন, তন্দুরি তো দোলের দিন অনেক বাড়িতেই রান্না হবে। সঙ্গে মাটন বিরিয়ানি তো রয়েইছে। পাশাপাশি আজ রবিবার এবং মঙ্গল-বুধ ছুটি থাকায় রেস্তোরঁাতেও ভিড় বাড়বে। তাই আগে থাকতেই তঁারা মাংস কিনে মজুত করছেন। আর চাহিদা বাড়ায় এবং জোগান কমার কারণেই মাংসের দামে ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্তকে। ওয়েস্টবেঙ্গল পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য দীপ দে বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে ভাইরাস হানায় প্রতিবছরই ৩০-৪০ শতাংশ মুরগি উৎপাদনের সময়ই মরে যায়। ফলে জোগান কমে। আর সেই কারণেই দামটা কিছুটা বাড়ে। তাছাড়া দোল-হোলি উপলক্ষে বাজারে এই সময়টা দাম কিছুটা বেশি থাকে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.